করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নেওয়া পদক্ষেপ আইওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়, অভিযোগ বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের

শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ৯ এপ্রিল:
উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ করতে রাজ্য সরকারের ১৫ দিন সময় লেগে গেল। কেন এতদিন পর রাজ্য সরকারের টনক নড়ল? লকডাউনের এতদিন পর যে দুজন চিকিৎসককে পাঠানো হল তাঁরা নিজ ক্ষেত্রে স্বনামধন্য হলেও করোনার মত সংকটময় পরিস্থিতি বোঝার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ নন। কেন এই অবহেলা? উত্তর বঙ্গে করোনা মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এমনি একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।

দুদিন হল করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার টাস্কফোর্স গঠন করেছে। সেই টাস্কফোর্সের কাজ নিয়ে হেলিকপ্টারে করে দুজন চিকিৎসক এতদিন পর উত্তর বঙ্গে করোনা মোকাবিলায় পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গেছেন। কিন্তু কেন করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গকে এতদিন পরে গুরুত্ব দেওয়ার কথা মনে পড়ল রাজ্য সরকারের, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ।

তার আরও অভিযোগ, যে দুজন চিকিৎসককে রাজ্য সরকার পাঠিয়েছে, তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বনামধন্য হলেও এপিডেমিওলজিস্ট নন। অর্থাৎ করোনার মত মহামারীর কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। ঐ দুই চিকিৎসকের একজন হেপাটোলজিস্ট বা লিভার বিশেষজ্ঞ ও একজন গ্যাস্ট্রোলজিস্ট। অথচ করোনা এখন মহামারী। উপরন্তু এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসাও নেই এখনো। তাই উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি বুঝতে ও সামাল দিতে এই মুহূর্তে দরকার ছিল কোনো এপিডেমিওলজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট ভাইরোলজিস্টের। নাহলে নিদেনপক্ষে একজন ইমিওনোলজিস্টও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারতেন বলে দাবি করেছেন সুকান্তবাবু।

তিনি জানান, এই দুই চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তর বঙ্গের করোনা রোগীদের চিকিৎসা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের বদলে স্থানীয় একটি নার্সিং হোমে হবে। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিজেপি সাংসদ প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি ধরে নিতে হবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে করোনা চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। আর সেই কারণেই কি রোগীদের বেসরকারি নার্সিং হোমে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ‌্য হয়েছেন ওই দুই চিকিৎসক?

গোটা ঘটনাকে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একটা “আই ওয়াশ” বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ঠিক কী করতে চাইছে তা স্পষ্ট নয়। সর্বোপরি তিনি বলেন, মহামারী আটকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু বার বার টেস্ট করার উপর জোর দিলেও রাজ্য সরকারকে সেই ধরণের পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। আর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ছাড়া উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে তেমন বড় চিকিৎসার ক্ষেত্রও নেই। এখানকার মানুষ এখনও দিশাহীন। অথচ এখানেও ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *