পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা করতে এসে, পাল্টা প্রতিরোধে পালিয়ে গেল আক্রমণকারীরা

আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৬ ডিসেম্বর: পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালালো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধীরা। অভিযোগ, মিছিলের সামনে পুলিশ থাকলেও তারা ছিল নিষ্ক্রিয়। পুলিশের সামনেই হামলাকারীরা বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙ্গচুর করে দলীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়। জাতীয় পতাকা মাটিতে ফেলে তার ওপর চলল দাপাদাপি। পরে তাড়া খেয়ে পালালো আক্রমণকারীরা। এই ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বারাসাত শহরের প্রাণকেন্দ্র চাপাডালি মোড় থেকে শ’দুয়েক বিক্ষোভকারী কালো পতাকা নিয়ে মিছিল শুরু করে। এই মিছিল এগিয়ে যায় কাজীপাড়ার দিকে। সরোজ পার্কের কাছে পৌঁছতেই রাস্তার পাশে থাকা বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা করে। তারা পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর করে বিজেপির দলীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়। এরপর পার্টি অফিসে থাকায় জাতীয় পতাকা মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর, পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে তার উপরে চলে দাপাদাপি।

আচমকা এই হামলায় এলাকার মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা দরজা-জানলা বন্ধ করে দেন, গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। আশেপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে হামলাকারীরা একটি ধর্মীয় স্থানের দিকে এগোতে থাকে। আর সেই মুহূর্তেই পাল্টে যায় চিত্রটা।এতক্ষণ যে মানুষ ভয়ে আতঙ্কে ছিল, তারাই এবার হঠাৎ বেড়িয়ে এসে পাল্টা তাড়া করে আক্রমণকারীদের। অভিযোগ সেই সময় পুলিশ ছিল কার্যত দর্শকের ভূমিকায়। কিন্তু এলাকার মানুষের তাড়া খেয়ে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আশেপাশের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়ে।

এরপর এলাকার ক্ষুব্ধ মানুষ টাকি রোড অবরোধ করে।প্রায় এক ঘন্টা ধরে এই অবরোধ চলে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরাসরি বারাসাত থানার আধিকারিকের কাছে তারা জানতে চান, আপনাদের উপস্থিতিতে কী করে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে হামলা হল। এটা তো আন্দোলন নয় এটাতো গুন্ডাবাজি। এই প্রশ্নের মুখে পুলিশ আধিকারিক তখন কার্যত অসহায় হয়ে পড়েন। তিনি যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন, সব রাজনৈতিক দল যদি একসঙ্গে কর্মসূচি নেয়, তাহলে আমরা কী করব। আমাদের দিক থেকে কোনো গাফিলতি নেই। তারা এরপর বিষয়টি দেখবেন বললে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয় এবং তারা অবরোধ তুলে নেন।

স্বপন মন্ডল নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, আমরা আতঙ্কিত। পুলিশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর আমাদের বিশ্বাস নেই। ভোট ধরে রাখতে পুলিশকে এরা ফুটো জগন্নাথ করে রেখেছে। আর সেই সুযোগ নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। আমরা তাই পথে নামতে পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।

এতক্ষণ হামলাকারীরা ভয়ে বিভিন্ন গলিতে লুকিয়ে ছিল।পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতেই হামলাকারীরা বেরোতে শুরু করে। তাদের দেখে ফের তাড়া করে এলাকার মানুষ। একদিকে এলাকার মানুষ আর একদিকে পুলিশ এই দুইয়ের মাঝে পড়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করে ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *