শ্রমিক বঞ্চনার প্রতিবাদে বড়জোড়ার ঘুটগড়িয়ায় থালা হাতে বিক্ষোভ বিজেপির

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৪ মার্চ: শ্রমিকদের বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে আজ বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের ঘুটগড়িয়ায় একটি কারখানার সামনে খালি থালা হাতে বিক্ষোভ ও অবস্থান করে বিজেপি। ‘শনিক থার্মাল প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি ক্ষুদ্র ইস্পাত কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের উপর বঞ্চনার অভিযোগ রয়েছে।

বিজেপির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকদের বঞ্চিত করে রাখা হচ্ছে। শ্রম আইন মেনে তাদের ন্যুনতম মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবাদ করতে গেলে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। তারই প্রতিবাদে এদিনের কর্মসূচি বলে জানান বিজেপি নেতারা। বিজেপি শ্রমিক সংগঠনের এদিনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির বড়জোড়া মন্ডল-১ সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ। এই বিক্ষোভ অবস্থানে উপস্থিত ছিলেন দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর ও অন্যান্য নেতারাও।

গোবিন্দ ঘোষ বলেন, শ্রমিক বঞ্চনা শুধুমাত্র বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের উপরই হচ্ছে না। কারখানার সমস্ত শ্রমিকদের উপরই হচ্ছে। রাজ্য সরকার যেমন ডিএ না দিয়ে কেবলমাত্র বিরোধী কর্মী সংগঠনের সরকারি কর্মীদের অধিকার হরণ করছে না তৃণমূল সংগঠনের কর্মচারিদেরও সমান ভাবে শোষন করছে। কিন্তু বিরোধীরা সোচ্চার হলেও শাসক পন্থীরা আনুগত্যের কারনে কিছু বলতে পারছেন না। বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বেসরকারি কারখানাগুলিতেও একই ভাবে শ্রমিকেরা বঞ্চিত। শ্রমিকদের শোষণ করে শাসক নেতাদের তোষন করছে মালিক ও কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এটা চলতে দেওয়া যাবে না।

দলের যুব মোর্চার নেতা সোমনাথ করের অভিযোগ শাসক দলের দলের নেতাদের সন্তুষ্ট করে শ্রমিকদের ন্যাহ্য দাবি দাওয়া মানা হচ্ছে না। এখানের কিছু নির্মাণ শ্রমিককে পুনরায় কাজে নিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। কয়েকজনকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে গেলেই মিলছে কড়া ধমক এবং তাদের জব্দ করতে কারখানার ভেতরেই চাবি লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও সোমনাথ বাবুর দাবি। তিনি বলেন, প্রতিবাদী শ্রমিকদের পিএফ এর টাকা আটকে দেওয়া হচ্ছে। ছাঁটাই শ্রমিকদের নিয়োগ করছে না। অথচ শাসক নেতাদের তুষ্ট রাখতে কারখানার ভেতরে তাদের নিকট আত্মীয়রা ঠিকাদারি কাজ করছে।

এদিন সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারিরা একসময় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিক্ষোভকারীরা হুমকি দিতে থাকেন যতক্ষণ না এর সুষ্ঠ সমাধান মিলবে তাদের এই আন্দোলন চলবে। তাদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ দেখা করতে না চাওয়ায় পরবর্তীতে আরো বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারিও দিতে থাকেন। শেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে বেলা ২টো নাগাদ বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন তারা।

এবিষয়ে বড়জোড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অলক মুখার্জি বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে শ্রমিকদের উপর নিপীড়ন করে তাহলে বলব বিজেপি নেতাদের আন্দোলন করতে পারেন। কিন্তু টিভিতে মুখ দেখানোর জন্য যদি তারা ভেক ধরতে থাকেন তাহলে মানুষ তাদের ঠিক জবাব দেবেন। তৃণমূলের উপর যে অভিযোগ আনছেন তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অলক মুখার্জি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *