মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে বিজেপির বিশাল মিছিল কলকাতায়

আমাদের ভারত, ২৮ জুলাই: নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে এবার বড়সড় আন্দোলনে নামল বিজেপি। কলেজস্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিজেপির মিছিলে ছিল উপচে পড়া ভিড়। শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিংবা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় নয় বাংলার এই দুর্নীতিতে জড়িত প্রত্যেকের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। তবে সবার আগে এই দুর্নীতির দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিজেপি।

এদিন প্রথমে রাজ্য বিজেপির তরফে উত্তর কলকাতা কলেজ স্ট্রিটে একটি জমায়াত করা হয়। সেইখান থেকে মিছিল রওনা দেয় ধর্মতলার উদ্দেশ্যে। মিছিলে ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাহুল সিনহা, প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী সহ একাধিক নেতৃত্ব। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির মিছিল থেকে দাবি তোলা হয়, রাজ্য মন্ত্রিসভা ও প্রশাসনে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।

মিছিলে বিজেপি নেতা কর্মীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা, “পদত্যাগ চাই মুখ্যমন্ত্রীর।” অন্য প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল শিক্ষামন্ত্রী ভাবুন, এসএসসি নিয়োগের পড়ুয়াদের চোখের জলের অভিশাপ বিফলে যাবে না। খেলবেন না? খেলুন।” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কুশপুতুল একটি হুইল চেয়ারে বসানো হয়েছিল এই মিছিলে। এছাড়াও মিছিলে দেখা যায় এক বিজেপি কর্মীকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাজিয়ে তার কোমরে দড়ি বাঁধা হয়েছে। ওই ব্যক্তির গলায় পেঁয়াজের মালা পরানো হয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তৃণমূল বুঝতে পেরেছে তাদের সময় শেষ। রাজ্যের জনগণ মুখ্যমন্ত্রীর সততার মুখোশের আড়ালে যে কোন মুখ লুকিয়ে আছে তা সবাই বুঝতে পেরে গিয়েছে। আর সেই জন্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এখন অস্বীকার করার চেষ্টা চলছে। বাংলার মানুষ এত বোকা নয়। তারা বোঝে আসল অনুপ্রেরণা কোথা থেকে আসে।”

রাহুল সিনহা বলেছেন, “এতদিন আমরা শুনেছি লোকেরা ভোটের ফলাফলের জন্য রাত জেগে থাকেন। তবে কালকে আমরা দেখলাম টাকার ফলাফল কি দেখার জন্য মানুষ রাতভর অপেক্ষা করছে। ২১ পার হয় নাকি ২১ এর নিচে থাকে। এই অবস্থা বাংলার কখনো ছিল না। যে ভেলকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখালেন, এরপর কোন মুখে কথা বলছেন? আমি পরিষ্কার বলছি এই টাকা তৃণমূলের টাকা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় উপলক্ষ মাত্র। এটা একটা অংশ বেরিয়েছে মাত্র। হাজার কোটি টাকাও পেরিয়ে যেতে পারে। এগুলো সব চুরির টাকা।”

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই গ্রেপ্তার হন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার একাধিক ফ্ল্যাট মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। এরপরই তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। দাবি করা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার। আজ দুপুরেই তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল বেলা দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *