তিলজলা- গাজলে কেন্দ্রীয় কমিশনকে বাধা মারধর বচসা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রশ্নে নয়া হাতিয়ার সুকান্ত শুভেন্দুদের

আমাদের ভারত, ১ এপ্রিল: রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যখন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা বার বার আঙুল তুলছে, তখনই তাতে নয়া সংযোজন হলো তিলজলা কাণ্ডে সাত বছরের একটি নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের ঘটনার তদন্তে এসে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের বাধা পাওয়ার ঘটনাও। তিলজলার মতো জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনকে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে মালদার গাজোলেও বলে অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। আর এই দুই ঘটনাকেই নয়া হাতিয়ার করে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সুকান্ত শুভেন্দুরা।

বিজেপির জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগোকে তিলজলা থানায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনাকে সামনে রেখে আইনের শাসন গুরুতর পর্যায়ে চলে গেছে বলে প্রশ্ন তুলেছে পদ্মশিবির। আগামী দিনে তারা এই ঘটনার বিরোধিতায় কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে বলেও জানা গেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “গোটা দেশের কাছে লজ্জার ঘটনা ঘটেছে গতকাল। বাংলা ও বাঙালির কাছে এটা লজ্জার যে শিশু অধিকার রক্ষার কমিশনের চেয়ারম্যানের গায়ে হাত তুলেছে পুলিশ।” একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “তাহলে বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী তথা সাধারণ মানুষের অবস্থা ঠিক কেমন তা সহজেই অনুমেয়।”

তিলজলা থানায় প্রিয়ঙ্ক কানুনগোকে মারধরের ঘটনায় আইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় কমিশনের যিনি চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনোগ তিনি। তারপর তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে কিন্তু তাকে সাসপেন্ড করা উচিত ছিল।”

এই ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লিখেছেন, “জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন হল সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। ২০০৫ সালে কমিশন ফর প্রটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের অধীনস্ত সেই কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো তিলজলা থানার ভেতর প্রহৃত হয়েছেন। এটাই বাংলার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি।” শুভেন্দু যে পরিস্থিতির কথা বলেছেন প্রিয়ঙ্ক সেই একই অভিযোগ করেছেন।

অন্যদিকে শনিবার মালদার গাজলে নাবালিকা ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তে গিয়েও জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের সঙ্গে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের গন্ডগোলের ছবি। মালদার গাজলে কয়েকদিন আগে স্কুল ছাত্রীর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান এনসিপিসিআর দলের প্রতিনিধিরা। আবার ওই দিনই সেখানে পৌঁছায় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। জানাগেছে, তখনই শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। এমনকি হাতাহাতিও শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি ঘটনায় জড়ায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী সমর্থকরাও। তাদের মধ্যে ব্যাপক বচসা শুরু হয়।

এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, কেন এতদিন রাজ্যের কমিশনের মনে হয়নি গাজোলে আসার কথা? শুধুমাত্র রাজনীতি করা হচ্ছে। এদিকে বাচ্চাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। একটি বাচ্চা মেয়েকে রেপ করে মারা হলো। তিলজলা, গাজল একের পর এক ঘটনা ঘটছে। আর চুপ করে বসে আছে রাজ্য। কিন্তু যখন কেন্দ্রের কমিশনের প্রতিনিধি আসছে তখন রাজ্য কমিশন লেজ উঠিয়ে দৌড়াচ্ছে। এখন কেন রাজ্যের মনে হল? যখন কেন্দ্রীয় কমিশন এল তার আগে তারা আসেনি কেন? তাহলে কি তারা কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের অঙ্গুলি হেলনে কাজ করছেন? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিচ্ছেন তারপরে দৌড়াচ্ছেন?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *