আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১২ ডিসেম্বর: একমাত্র মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে, পরিবারের উদ্যোগে রক্তদান উৎসব অনুষ্ঠিত হল মেদিনীপুর শহরে। ব্যতিক্রমী ভাবে পালিত হল জন্মদিন। আয়োজিত হল রক্তদান উৎসব। মেদিনীপুর শহরের নবীনাবাগ-মীরবাজার এলাকার বাসিন্দা কুইকোটা জিএসএফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামাপদ পাণিগ্রাহী ও গৃহবধূ মণিকা পাণিগ্রাহীর একমাত্র কন্যা তিয়াশার জন্মদিন ছিল শনিবার। ২২ বছর পূর্ণ করে ২৩ শে পা রাখল তিয়াশা। বেশ কিছু দিন আগে আসানসোলের ইএসআই নার্সিং কলেজের ছাত্রী তিয়াশা তার বাবা-মাকে জানায় এবছর তার জন্মদিনটা সে একটু অন্যরকম ভাবে পালন করতে চায়। সে চায় তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে এবার একটি রক্তদান শিবির আয়োজন করতে। মেয়ের ইচ্ছায় সম্মতি দেন তিয়াশার বাবা-মা।বাবা-মার পাশাপাশি তিয়াশা পাশে পেয়ে যান তাঁর বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের। সেইমতো শুরু হয় প্রস্তুতি।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মেদিনীপুর জেলা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম। পরিকল্পনা মতো শনিবার নবীনাবাগ-মীরবাজারের অবসর উদ্যান সেবা কেন্দ্রে রক্তদান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শিবিরে রক্তদানে এগিয়ে আসেন তিয়াশার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও পাণিগ্রাহী পরিবারের শুভানুধ্যায়ীরা।শিবিরে ৮ জন মহিলা সহ মোট ৩৭ জন রক্তদান করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবার রক্ত দিলেন। রক্ত সংগ্রহ করেন খড়্গপুর ব্লাড ব্যাঙ্ক। পারিবারিক অনুষ্ঠানে আয়োজিত এই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হতে পেরে খুশি রক্তদান আন্দোলনের কর্মী অসীম ধর, জয়ন্ত মুখার্জি, সুদীপ কুমার খাঁড়া, ফাকরুদ্দিন মল্লিক, সন্তু রায়,পার্থপ্রতিম মল্লিকরা। ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সভাপতি অসীম ধর, পাণিগ্রাহী পরিবারের এই ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমরা চাই এই ধরনের পারিবারিক উৎসবে আরও বেশি বেশি করে রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হোক। নার্সিংয়ের ছাত্রী তিয়াশা বলেন, নিজের জন্মদিনে রক্তদান শিবির আয়োজনে আমি খুশি। এই শিবির থেকে সংগৃহীত রক্তে রক্ত সঙ্কট কিছুটা হলেও মেটাতে পারলে আমি খুশী হব।
শিবির সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিয়াশার বাবা, মা শ্যামাপদ পাণিগ্রাহী ও মণিকা পাণিগ্রাহী সমস্ত রক্তদাতা সহ শিবির আয়োজনে সাহায্যকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানান, একমাত্র কন্যার
ইচ্ছাকে গুরত্ব দিয়ে রক্তদান শিবির আয়োজনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও মানবসেবার কাজ করতে পেরে তাঁরা খুশি।তাঁরা আরও বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা প্রতিবছর এই ধরনের শিবির আয়োজনের চেষ্টা করবেন।