পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৬ ডিসেম্বর: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় বীর সৈনিকদের আত্মবলিদানের কাহিনী স্মরণ করে বিজয় দিবস পালন হিলিতে। ৪৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বীর সেনাদের কাহিনী শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে স্থান দেওয়ার দাবি তুললেন বালুরঘাটের সাংসদ। বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হিলিতে বিএসএফ ও বিজিবির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এদিন ভারতীয় বীর সৈনিকদের আত্মবলিদানের কাহিনী তুলে ধরা হয়। প্রতিবেশী দেশের স্বাধীনতায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে যে জয় এনে দিয়েছিল ভারতীয় সৈনিকরা তা যাতে শিশুদের পাঠ্যপুস্তে অন্তর্গত করা হয় তারই জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
এদিন হিলি হাইস্কুল ময়দানে বিএসএফের ৬১ নম্বর ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে এক বনার্ঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন দুই দেশের জওয়ানরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের আইজি সুনীল কুমার ত্যাগী, ডিআইজি তেজেন্দ্র প্রতাপ সিদ্ধু, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের তরফে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কায়সার হাসান মালিক, কর্নেল মোঃ জাহিদুল হক, বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় বিভিন্ন ব্যাটেলিয়ানের প্রায় ১৩৩ জন সেনা জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন হিলি সীমান্তে। এদিন সেসব শহিদদের উদ্দেশ্যে শহিদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন দুইদেশের জওয়ানরা। বীর সেনাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদারও। এরপরেই দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের গড়িমা বৃদ্ধি করেন জওয়ানরা। বিজিবি ও বিএসএফের তরফে সাংসদ সহ পদস্থ আধিকারিকদের জানানো হয় বিশেষ সংবর্ধনাও। আলোকপাত করা হয় বীর শহিদদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের কাহিনীও।
বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের অবদান অবিস্মরণীয়। দুদেশের সেনাদের সেই বীরত্বের কাহিনী বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্গত থাকলেও ভারতে তা নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহিদদের সেই কাহিনি যাতে শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্গত করা হয় সেই দাবি তিনি জানান।
বাংলাদেশের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কায়সার হাসান মালিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ ভারতীয় সৈনিকদের অবদান কখনো ভোলার নয়। আজ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় শহিদ সেনাদের সন্মান জানানোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে যথেষ্টই আপ্লুত হয়েছেন।
বিএসএফের আইজি সুনীল কুমার ত্যাগী জানিয়েছে, ১৯৭১ সাল থেকে দুই দেশের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। এদিন বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় বীর শহিদদের স্মৃতি চারণ করা হয়েছে। দুদেশের মধ্যেকার এই মধুর সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।