বৃহন্নলার অত্যাচারে মৃত্যু হল দুধের শিশুর

আমাদের ভারত, অমরজিৎ দে, ঝাড়গ্রাম, ২৪ জানুয়ারি : বৃহন্নলাদের জোরজুলুমের কথা বাসে-ট্রেনে কান পাতলেই শোনা যায়। আবার কোনও বাড়িতে সন্তানের জন্ম হতেও আবার বৃহন্নলার দল পৌঁছে যান বাড়িতে বাড়িতে। চলে টাকার আবদার আবেদন, আবার কখনও এই টাকার আবদারের নামে করেই চলে রীতিমতো জুলুমবাজি। কখনও সেই জোরজুলুমের মাত্রা এতটাই ছাড়িয়ে যায় যে ঘটে যায় মারাত্মক ঘটনাও। যেমন এবার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রামের জেলার বিনপুর থানার শিলদাতে। তিন বৃহন্নলার অত্যাচারে মৃত্যু হল এক একমাসের একুশ দিনের এক শিশুর। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসী, পাশাপাশি এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর যমজ ছেলের জন্ম হয়েছিল শিলদার বাসিন্দা চন্দন খিলারের। কিন্তু তাঁদের এক ছেলে সুমনের হার্টের সমস্যা দেখা দেওয়ায় ওই শিশুটি ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিল। ২০ দিন চিকিৎসা চলার পর ওই শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তবে তাঁর চিকিৎসা আরও কিছুদিন চলবে বলেও জানানো হয়েছিল হাসপাতালের তরফ থেকে। এদিকে দুই সন্তানই বাড়িতে রয়েছে এই খবর পৌঁছে যায় বৃহন্নলাদের কাছেও।

শুক্রবার সকালে তিন বৃহন্নলা হাজির হয় চন্দন খিলারের বাড়িতে। এগারো হাজার টাকা দিতে হবে এই দাবিতে জোরাজুরি শুরু করেন তাঁরা। একইসঙ্গে দুটি শিশুকেই তাঁদের হাতে নাচানোর জন্য তুলে দেওয়ার আবদারও করতে থাকন ওই বৃহন্নলার দল। কিন্তু অসুস্থ বলে এক শিশুকে দিতে রাজি হয়নি ওই দম্পতি। বারবার পরিবার আপত্তি করেছিল শিশুকে নাচাতে কিন্তু তাদের দাপটের কাছে পারে কে? অসভ্য গালিগালাজ অভিশাপ পেয়ে বাধ্য হয়ে পরিবারকে শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেন। পরিবারের দাবি মোটা টাকা আদায় করতেই কার্যত জোর করে ছিনিয়ে নিয়েই দুই সদ্যজাতকে নাচায় বৃহন্নলারা। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই অসুস্থ শিশুটি, প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। তারপর ওই শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই এলাকাবাসী ওই তিন বৃহন্নলাকে ধরে বিনপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তদন্ত শুরু করেছে বিনপুর থানার পুলিশ।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here