বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে দিল্লিতে ধর্নার ডাক

আমাদের ভারত, ৫ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি আগমন উপলক্ষে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ও বৌদ্ধ সমাজের উপর অবিরত অত্যাচার বন্ধের দাবি জানাল ‘প্রবাসী বঙ্গীয় সমাজ দিল্লি-এনসিআর’, ‘অল ইণ্ডিয়া রিফিউজি ফ্রন্ট কলকাতা’ এবং অন্যান্য বাঙ্গালী ও উদ্বাস্তু সংগঠন। মঙ্গলবার দিল্লীর যন্তর মন্তর প্রাঙ্গণে এ কারণে ধর্না ও বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।

‘অল ইণ্ডিয়া রিফিউজি ফ্রন্ট’-এর তরফে মোহিত রায় জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দিল্লি আসছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। এই উপলক্ষে আমরা শ্রীমতী শেখ হাসিনার কাছে কিছু দাবি পেশ করতে চাই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ও বৌদ্ধ সমাজের উপর অবিরত অত্যাচারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি দাবি করছি।“

‘প্রবাসী বঙ্গীয় সমাজ দিল্লি-এনসিআর’-এর অজিত পাল ও পদ্মনাভ ভাদুড়ী-র অভিযোগ, এক বছর আগে দুর্গাপুজার সময় সারা বাংলাদেশ জুড়ে পূজা মণ্ডপ, মন্দির ও হিন্দু বসতিতে প্রায় ২০০টি আক্রমণ সংঘটিত হয়। এই সময় পুলিশ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে। এ বছর পূজার সময় আসতেই ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে।

অভিযোগ, একটি রিপোর্ট অনুযায়ী গত ছয় মাসে বাংলাদেশে ৭৯ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে, ৫৬টি মন্দিরে হামলা হয়েছে এবং হামলার ৫০১টি ঘটনা ঘটেছে। হিন্দু সমাজের ১৩ জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, এর মধ্যে ১০টি ক্ষেত্রে গণ ধর্ষণ ও তিন জনকে হত্যা করা হয়েছে। ১৯টি ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে, ৯৫ জনকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে এবং ৬৩টি সাম্প্রদায়িক অবমাননার ঘটনা ঘটেছে। হিন্দু শিক্ষকদের মিথ্যা অভিযোগে অত্যাচার, কোথাও জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, সাভার দিকে দিকে একই ঘটনা ঘটে চলেছে।

একই রকম আক্রমণ চলেছ বৌদ্ধ সমাজের উপর। চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে বৌদ্ধ জুম্‌ম জনজাতির জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে এবং সামরিক বাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। গত ৫০ বছর ধরে এইসব অত্যাচারের কোনও বিচার হয়নি, কেউ সাজা পায়নি। সর্বশেষ জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা আরো কমে হয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ।“

এক বিবৃতিতে আন্দোলনকারীরা জানান, আমাদের দাবি— ১) হিন্দু ও বৌদ্ধ সমাজের উপর সমস্ত অত্যাচার অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২) সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেফতার ও শাস্তি দিতে হবে।
৩) ধর্ম অবমাননার নামে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা বন্ধ করতে হবে।
৪) সব হিন্দু শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়ে মিথ্যা মামলাগুলি তুলে নিতে হবে।
৫) ইসলামি ওয়াজ ও মেহফিলে হিন্দু ধর্মের অবমাননা বন্ধ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *