আমাদের ভারত, ২৩ মে: জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলা ঘিরে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। তার মধ্যে কুতুব মিনার চত্বরে হিন্দু ও জৈন দেবদেবীর মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি করে মামলা দায়ের হল দিল্লি আদালতে। একই সঙ্গে ওই চত্বরে প্রার্থনার অনুমতি চেয়েছেন মামলাকারীরা। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হবে।
জানা গেছে, জৈনদের দেবতা ঋষভদেব, হিন্দুদের ভগবান শ্রীহরি বিষ্ণুর হয়ে মামলাটি করেছেন আইনজীবী হরিশংকর জৈন এবং রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ইতিহাস সংক্রান্ত একটি নথি দেখিয়ে মামলাকারীরা দাবি করেন, কুতুব মিনার চত্বরে সাতাশটি মন্দির ধ্বংস করে সেই পাথর দিয়ে কুয়াত উল ইসলাম মসজিদ তৈরি করেন মহম্মদ ঘড়ির সেনাপতি কুতুব উদ্দিন আইবক। সেখান থেকে বিষ্ণু, কৃষ্ণ, গণেশ সহ বেশ কিছু দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে। এছাড়াও কলস ও পদ্ম ফুলের মত পবিত্র সংকেত চিহ্ন থেকে এটা স্পষ্ট যে এটি আসলে হিন্দু মন্দির ছিল। এটা স্পষ্ট যে কুতুবমিনার চত্বরে জৈন ও বিষ্ণুদেবের বিশাল মন্দির ছিল। আজকের কুতুবমিনার আসলে তখনকার তৈরি মেরু ধ্বজ।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি করেছে, এখন যেখানে কুতুবমিনার একসময় সেখানে ছিল ২৭টি হিন্দু মন্দির ছিল। সেই মন্দির গুলি আবার নতুন করে নির্মাণ করে দিতে হবে। সেই সঙ্গে সেখানে পূজা করার সুযোগ করে দিতে হবে।
গত এপ্রিল মাসে কুতুব মিনার চত্বরে গণেশ মূর্তি সরানোর নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়। ন্যাশনাল মনুমেন্ট অথরিটি মূর্তিগুলোকে সরাতে বলে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগকে তারপরই দিল্লি আদালতে ওই মামলা করেন আইনজীবী হরিশংকর জৈন। মামলার আবেদনে বলা হয়, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কুতুব মিনার চত্বর থেকে গণেশ মূর্তি সরানোর পরিকল্পনা করেছে। ন্যাশনাল মনুমেন্ট অথরিটির আবেদনের ভিত্তিতে একাজ হতে চলেছে। মূর্তিটিকে জাতীয় জাদুঘরে স্থাপন করা হতে পারে। আবেদনে বলা হয়, কোটি কোটি হিন্দু গণেশ দেবের পুজো করেন অথচ সেই মূর্তি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুঃখজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। শুনানি শেষে এএসআইকে ওই মূর্তি না সরানোর নির্দেশ দেয় দিল্লির আদালত।
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্গত কুতুবমিনার ইটের তৈরি মিনারের মধ্যে এটি বিশ্বের দীর্ঘতম। তবে সম্প্রতি পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক প্রাক্তন আধিকারিক ধরমবীর শর্মা দাবি করেছেন, কুতুবমিনার নির্মাণ করেছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য। এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বরাবর দাবি করে আসছে কুতুব মিনার চত্বরে সাতাশটি মন্দির ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল তীর্থঙ্কর ভগবান ঋষভদেবের উপাসনা স্থল, ভগবান বিষ্ণু, শিব, সূর্য, হনুমান ও দেবী গৌরীর মন্দির।