জেলায় জেলায় তদন্ত সফরে সিবিআই, কোথায় গেল সিট? হাইকোর্টের দ্বারস্থ মামলাকারীরা

রাজেন রায়, কলকাতা, ৩০ আগস্ট: খুন ধর্ষণ ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ঘটনাবলীকে আলাদা করে সিবিআই’কে এবং বাড়ি ভাঙ্গচুর এবং মারধরের মত ঘটনাবলীর তদন্তের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের সিটকে দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত সপ্তাহের শুরু থেকেই জেলায় জেলায় সফরে সক্রিয় সিবিআই তদন্তকারীরা। খুন হওয়া বিজেপি কর্মীদের পাশাপাশি তারা যাচ্ছেন মৃত তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে। কিন্তু কোথায় রাজ্য পুলিশের তিন আইপিএসের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল?
এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন মামলাকারীরা।

উল্লেখ্য, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত ১৯ অগস্ট এই মামলার রায় দেয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম ডিভিশন বেঞ্চ। খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করবে সিবিআই এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার তদন্ত করবে সিট।

যার জেরে চার জোনেই ক্যাম্প করে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। একটি ক্যাম্প দুর্গাপুরে। সেখান থেকে মূলত বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি পশ্চিমের জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। একটি ক্যাম্প উত্তরবঙ্গের জন্য। সেই ক্যাম্প কোচবিহারে হয়েছে। এই জেলা থেকে সব থেকে বেশি ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ এসেছে। কলকাতা থেকে ওত দূরে গিয়ে আক্রান্ত ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা সময় সাপেক্ষ। সে কথা মাথায় রেখেই তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাকি দুটি ক্যাম্প চলছে কলকাতাকে কেন্দ্র করে। কলকাতা সংলগ্ন কয়েকটি জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করবে এই দুটি ক্যাম্প। ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে স্পট ভিজিট শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। আক্রান্তদের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। কিন্তু আদালতের রায়ের এতদিন পরেও সিটের কার্যকারিতা সেভাবে চোখে পড়েনি।

সিটের যে নির্দিষ্ট কাজের জোন, তাও চিহ্নিত করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছিল, সিটের তদন্তভার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরে। তিনি গোটা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়বে কলকাতা হাইকোর্টে।
মামলাকারীদের একাংশের বক্তব্য, সিবিআই যেখানে জেলায় জেলায় গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সেখানে সিটের তরফ থেকে কোনও বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়নি। যেহেতু বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি, সেক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অর্থাৎ যাঁর নজরে থাকবে গোটা বিষয়টি, তিনি চূড়ান্ত হননি। সিটের টালবাহানার জন্যই কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করতে চলেছেন মামলাকারীদের একাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *