দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণের নির্দেশ দিয়ে জঙ্গলমহলে কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী

জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৬ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গের পর জঙ্গলমহল সফরে মঙ্গলবার খড়্গপুরের প্রশাসনিক সভায় বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা এবং রূপায়ণের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুর দুটো চল্লিশ মিনিটে তিনি খড়গপুর পৌঁছে বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের আয়োজিত প্রশাসনিক সভায় যোগ দেন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলার পুলিশ সুপার, জেলা শাসক সহ রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকরা।

সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি তা দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন করোনা প্রসঙ্গে বলেন, পারিবারিক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। পরিবারের একজনের করোনা হলে বাড়ির অন্যান্যদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় করোনা আক্রান্ত হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। বিভিন্ন রোগ থেকে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি জেলায় সিএমওএইচ এবং
বিএমওএইচের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন, যে সমস্ত পুজো কমিটি দশ বছর পুজো করছে তাদের অনুমতি দিতে হবে এবং কোনও রাজনীতি না দেখে প্রতিটি পুজো কমিটি পঞ্চাশ হাজার টাকা করে যেন পায়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাঁচ ছ মাস হয়ে গেল রাজ্যে মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে যে সমস্ত জমিতে কোনও চাষাবাদ হয়নি সেই সমস্ত জমিকে কৃষি যোগ্য বা উৎপাদনশীল যোগ্য করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পটি হয়তো অনেকেই জানেন না তাই মুখ্যসচিবের কাছ থেকে প্রকল্প সম্বন্ধে এমএলএ এমপি ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের জেনে নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি করোনা প্রতিরোধে যে সমস্ত এনজিও কাজ করতে চাইছে তাদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জঙ্গলমহলে হাতির হামলায় যে সমস্ত পরিবারের লোকজন মারা গেছেন তাদের পরিবারের জন্য রাজ্য সরকারের যে আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ রয়েছে তা দেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের একজন সদস্যকে হোম গার্ড পদে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, মাওবাদী হামলায় যে সমস্ত পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ রয়েছেন এবং যাদের দশ বছর ধরে কোনও খোঁজ নেই তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং একজন সদস্যকে হোমগার্ড পদে চাকরি দেওয়া হবে। পাঁচ বছর আগে যাদের জুনিয়র কনস্টেবল পদে নেওয়া হয়েছিল তাদের এবার কনস্টবল করা হবে। এদিন তিনি পুরোহিত প্রকল্পে টাকা দেওয়া শুরু করেন।

মেদিনীপুরের কর্ণগড় মন্দির সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের জন্য এক কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেন। এছাড়াও ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম ভূমিতে সৌন্দর্যায়নের জন্য তিনি নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খাস জঙ্গলে পাঁচশ কোটি টাকা খরচ করে ক্ষুদ্র শিল্প তালুক গড়ে তোলা হচ্ছে। এই প্রকল্প হলে আট হাজার কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক পনের কোটি টাকা খরচ করে স্টেডিয়াম ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক সম্পূর্ণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথশ্রী প্রকল্পে এবার রাজ্য সরকার বারো হাজার কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *