সংক্রমণ যতই বাড়ুক, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে! মুখ্যসচিব

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৮ জুলাই: রাজ্যে করোনা সংক্রমণ যতই উর্ধ্বগামী হোক অথবা সুস্থতার হার নিচে নামতে থাকুক, করোনা পরিস্থিতি এখনও হাতের বাইরে যায়নি বলে দাবি করলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। অভয় দিয়ে মুখ্যসচিবের দাবি, করোনা টেস্ট বাড়ানোর কারণে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না।

একই সঙ্গে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা দাবি করেন, দৈনিক টেস্ট ২৫ হাজারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে রাজ্যের। যত দ্রুত সম্ভব তত দ্রুত বেশি পরিমাণ আক্রান্তকে চিহ্নিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য। করোনা মোকাবিলায় পরিকাঠামোর কোনও ঘাটতি নেই। হোম আইসোলেশনের রোগীদের জন্যও একটি হেল্পলাইনের ঘোষণা করেন তিনি। নম্বরটি হল ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২।

সংক্রমণ যে গতিতে ছড়াচ্ছে, তার থেকে অনেক দ্রুত গতিতে রাজ্য সরকার রোগ মোকাবিলার পরিকাঠামো তৈরি করছে। গ্রামের তুলনায় মূলত শহরাঞ্চলে মানুষের গতিবিধির ফলে বাড়ছে সংক্রমণ। তাই এবার কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে একটি ক্লাস্টার হিসাবে দেখা হবে এবং ওই সব জেলার মধ্যে পরিকাঠামোগত আদান-প্রদান চলবে। এ জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব সহ পদস্থ আধিকারিকদের দায়িত্বে রাখা হয়েছে।

একই সঙ্গে কনটেনমেন্ট এলাকাগুলিতে বিধি-নিষেধের কড়াকড়ি থাকলেও এখনই গোটা রাজ্যে সার্বিক লকডাউন করা হচ্ছে না। তাঁর কথায়, বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ১৫ হাজার কোভিড বেড রয়েছে। এখনও যথেষ্ট সংখ্যক বেড খালি রয়েছে বলে তাঁর দাবি। প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। কলকাতাতেই ১,৫০০ শয্যা ফাঁকা রয়েছে। তবে মোট আক্রান্তের ১৫ শতাংশ মৃদু উপসর্গ এবং ৭০ শতাংশ উপসর্গহীন। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে যে ১৪,৭০৯ জন করোনা রোগী রয়েছেন তার মধ্যে ১০,৫০০ জনের চিকিৎসা চলছে বাড়িতে, এরা উপসর্গহীন। যা মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশ। বাকিদের মধ্যে ২,২০০ জনের মৃদু সংক্রমণ রয়েছে। সামান্য গুরুতর সমস্যা রয়েছে ১,২৫০ জনের। আর ৬৬০ জনের অবস্থা গুরুতর। অর্থাৎ সামান্য গুরুতর ও গুরুতর মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীর সংখ্যা হবে ১,৯০০। ১০ কোটি জনসংখ্যার রাজ্যে এই সংখ্যা নগন্য। পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হারও এখন অনেক কম, মাত্র ২.৭৬ শতাংশ। যা জাতীয় গড়ের প্রায় সমান।
তাই কোভিড বেডের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ কমাতে উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গ যুক্ত রোগীদের জন্য রাজ্য সরকার হোম আইসোলেশনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *