“আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার জন্য চিন নতুন যাত্রা শুরু করছে“ —ঝা লিউ

আমাদের ভারত, ২৯ সেপ্টেম্বর : “চিনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেস শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সভা, এমন একটি সংকটময় মুহূর্তে অনুষ্ঠিত যখন সমগ্ৰ দল এবং সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর জনগণ সর্বাত্মকভাবে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার জন্য নতুন যাত্রা শুরু করছে।“

বুধবার রাতে একটি পাঁচতারা হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল ঝা লিউ। কলকাতায় গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের কনস্যুলেট জেনারেল পশ্চিমবঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের প্রতিষ্ঠার ৭৩তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনে তিনি এই মন্তব্য করেন। বলেন, ৭৩ বছর আগে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চিনা জনগণ কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এমন একটি উন্নয়নের পথ খুঁজে বের করার জন্য সংগ্রাম করেছে যা চিনের জাতীয়তার জন্য উপযুক্ত। আজকের চিনে জনগণের বিশ্বাস আছে, জাতির আশা আছে এবং দেশের শক্তি আছে।“

চিনের অব্যন্তরীন পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক বাজারে আর্থিক সংকট প্রভৃতির উল্লেখ না করেই সার্বিক ভাবে কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেন ঝা লিউ। বলেন, “চিনের নতুন উন্নয়নের সাথে বিশ্বে নতুন সুযোগ আনতে এবং বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে জ্ঞান ও শক্তির অবদান রাখবে। চিনা কনস্যুলেট জেনারেল পূর্ব ভারত ও চীনের মধ্যে আদান-প্রদান ও সহযোগিতার সেতু হয়ে উঠতে ইচ্ছুক। চিন ও ভারতের মধ্যে স্থানীয় আদান-প্রদান ও সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে এবং দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নে নতুন প্ৰাণশক্তি দিতে ইচ্ছুক।
ভারত-চিন বন্ধুত্ব বাড়াতে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।

কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধি অনুরাগ শ্রীবাস্তব (আইএএস), ললিত কলা একাডেমির প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী, বিজু জনতা দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়দর্শী মিশ্র, ভারতের প্ৰাক্তন ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের ডিরেক্টর মিঃ মনমীত সিং পোইন্দি, অল ইন্ডিয়া ওভারসিজ চাইনিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চেন ইয়াহুয়া।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আমলা জহর সরকার, সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়, সাংসদ নাদিমুল হক, সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও ওই দলের দুই নেতানেত্রী ফুয়াদ হালিম ও সায়রা শাহ হালিম, পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ মারিয়া ফার্নাণ্ডেজ, টেকনো ইণ্ডিয়ার সিইও ডঃ সুজয় বিশ্বাস প্রমুখ। ব্যবসা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল, বিভিন্ন দূতাবাস, চিনা সম্প্রদায়, চিনা সংস্থা ইত্যাদির প্রতিনিধিদের সাথে প্রায় ৬০০ জন উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনাটি কার্যত পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। একটি উষ্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অভ্যর্থনাকক্ষ লণ্ঠন এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে, একটি চমৎকার ঐতিহ্যবাহী চিনা সিংহ নৃত্য পরিবেশন করা হয়। অভ্যর্থনাকালে পরিবেশন করা হয় চিনের উন্নয়ন সাফল্য, সুন্দর দৃশ্য এবং অন্যান্য বিষয়ের প্রচারমূলক ভিডিও। চিন ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আদান প্রদানের পাশাপাশি সিপিসি প্রতিষ্ঠার শতাব্দীর জন্য সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্যের পরিবেশনাও হয়। রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান ছিল ইতিবাচক ও বন্ধুত্বের সুরে বাঁধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *