সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১৩ মে: টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগে কলকাতার সল্টলেকের ২০ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। আজ অভিযুক্তদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দা থানার কুদা গ্রামের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন মাহাতো স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি জানান, ২০১৩ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে এক মহিলা তাঁর মোবাইলে ফোন করে এক বহুজাতিক সংস্থার নামে টাওয়ার বসানোর প্রস্তাব দেন। সেই টাওয়ারে তাঁর ছেলেকে মাসিক ৬ হাজার টাকার চাকরি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়৷ ওই বেসরকারি সংস্থার তরফে প্রথমে চিত্তরঞ্জন মাহাতোর জমির কাগজপত্র নেওয়া হয়। তারপর ৫টি ব্যাঙ্কের ব্ল্যাঙ্ক চেক চিত্তরঞ্জনকে দিয়ে সই করিয়ে নেয় প্রতারকরা। চিত্তরঞ্জনের কাছে বেশ কিছু পলিসি করা ছিল৷ প্রতারকরা সেগুলিও কায়দা করে হাতিয়ে নেয় তার থেকে৷ এত কিছুর পরও যখন তারা ছেলের চাকরি এবং টাওয়ার বসানোর ব্যবস্থা করছিল না তখন ওই বেসরকারি সংস্থার সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন চিত্তরঞ্জন। তার মধ্যেই তাঁকে ওই সংস্থার তরফে বলা হয়, আরও টাকা না দিলে টাওয়ার বসানো যাবে না। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এনইএফটি করে ৪ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা দেন চিত্তরঞ্জন। তবে তারপরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷ ২০২১ সাল পর্যন্ত এইভাবে টাকা সম্পত্তি হস্তান্তর করে নেয় ওই বেসরকারি সংস্থা। পরে চিত্তরঞ্জন বুঝতে পারেন, জমি, পলিসি এবং টাকা- সব মিলিয়ে প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি৷ তখনই কেন্দা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চিত্তরঞ্জন।
এই ঘটনার তদন্দের ভার পায় সিআইডি।বৃহস্পতিবার রাতে সিআইডি কলকাতার সল্টলেক থেকে এই চক্রের মূল পান্ডা-সহ কুড়ি জনকে গ্রেফতার করে। সন্দীপ বিশ্বাস এই চক্রের মূল পান্ডা বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা-সহ একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। আজ তাদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের চৌদ্দ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে এর আগেও পুরুলিয়ার বিভিন্ন থানায় টাওয়ার বসানোর নাম করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরুলিয়ায়। সিআইডির তদন্তে আস্থা বাড়িয়ে তোলে প্রতারিতর পরিবারে। ধৃতদের আইনি সহায়তা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আইনজীবী তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “বিচারক ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। সিআইডির করা ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন মঞ্জুর হয়।”