চিন্ময় ভট্টাচার্য, আমাদের ভারত, ১০ এপ্রিল: ভবানীপুরের এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তার মায়ের দেহে মিলল নোভেল করোনা ভাইরাস। লেকটাউনের বাসিন্দা ওই মহিলাকে কিছুদিন আগে সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। সেই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলেই খবর। বর্তমানে ওই মহিলাকে টালিগঞ্জের এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, ওই ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও তাঁর পরিবারকে সরকারি আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ওই ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ভবানীপুরের ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়েছিলেন। ফলে কর্মচারীদের মধ্যেও সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। সেজন্য ইতিমধ্যেই ২০ জন ব্যাঙ্ক কর্মচারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে বলেই খবর।
গতকালই মুখ্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই রাজ্যে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৮০। লকডাউন বাড়ছে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আরও ১২ জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন বলেই বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘লকডাউন ভাঙা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।’ তবে এই বিষয়ে ১১ এপ্রিলের বৈঠকের পরই মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে রাজ্যে ৫৬২টি কোয়ারান্টাইন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। হোম কোয়ারান্টাইন থেকে ৯,৫০০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ এখনও হোম কোয়ারান্টাইনে নজরবন্দি রয়েছেন। লকডাউন ‘দমবন্ধ পরিস্থিতি’ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান,’সচেতন হলে ‘ ক্ষুদ্র শিল্প চালু রাখা সম্ভব। ভিড় না-বাড়িয়েও কাজ চালু রাখার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চেয়েছেন তিনি। এমনকী, কাপড়ের মাস্ক ও স্যানিটাইজার বানানোর জন্যও ছোট সংস্থাগুলোকে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন ক্ষেত্রে সরবরাহে সুবিধায় জরুরি ভিত্তিতে ট্যাক্সির মতো পরিবহণ চালু রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২ লক্ষের মতো অন্য রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিককে খাওয়াচ্ছে এই রাজ্য। এই জন্য রাজ্যে ৭১১টি শিবির গড়া হয়েছে। এই কাজে এনজিওগুলিও সাহায্য করছে বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি লাইসেন্সের অনুমোদন বৃদ্ধির মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তিনি। এছাড়াও যাঁরা অর্ধেক দামে রেশন কেনেন, তাঁদের তিন মাসের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মূলত চা পাতা কাটার জন্য, ১৫% শ্রমিক রেখে রাজ্যের চা বাগানগুলিকে চালু করতেও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।