আবার বিরোধী ঐক্য ! করোনা ইস্যুতে অ-বিজেপি দলগুলির বৈঠক, ক্ষতি নয় এতে লাভ হবে আমাদের, দাবি বিজেপির

আমাদের ভারত, ১৯ মে: করোনা পরিস্থিতি, পরিযায়ী ইস্যু ও শ্রম আইন পরিবর্তনের মত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে এবার বৈঠকে বসতে চলেছে একাধিক অ-বিজেপি দলগুলি। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন সহ একাধিক অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকের কথা শোনার পর তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতৃত্ব। তাদের পাল্টা দাবি বিরোধীদের এই ধরনের বৈঠকে আমাদের দাবি হবে।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বহুবার কেন্দ্রীয় সাহায্যের অপ্রতুলতার অভিযোগ তুলেছে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলি। অ- বিজেপি রাজ্যগুলিকে করোনা রুখতে কি কি সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তা নিয়ে কথা হবে বৈঠকে। এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হতে পারে। সূত্রের খবর,এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে পারেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এছাড়াও এনসিপি’র প্রধান শারদ পাওয়ার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বেসর্বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অ-বিজেপি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা থাকবেন। ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনও উপস্থিত থাকবেন এই বৈঠকে। ইতিমধ্যেই ১৫ টি দল বৈঠকে অংশগ্রহণ করবে বলে নিশ্চিত করেছে।

বিরোধীদের অভিযোগ লকডাউন সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের একতরফা সিদ্ধান্ত। জোর করে এটা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এছাড়াও শ্রম আইনের পরিবর্তন নিয়েও অ-বিজেপি দল গুলির বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন তার মধ্যেই হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক পায়ে হেঁটে নিজের বাড়ি ফিরছেন। তাদের কিভাবে বাড়ি পৌঁছানোর বন্দোবস্ত করা যায় এবং কিভাবে তাদের সাহায্য করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বৈঠকে।

তবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র জানিয়েছে আটকে পড়া শ্রমিকদের যাতায়াত সহজ করার জন্য অনলাইনে জাতীয় পরিচয় তথ্য ব্যবস্থা বা এম এম আই এস তৈরি করা হয়েছে।

সম্প্রতি রাহুল গান্ধীকে রাস্তায় নেমে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। এই বিষয়টিকে ড্রামা বাজি বলে কটাক্ষ করেন অর্থমন্ত্রী নির্মালা সীতারামন। তিনি বলেছেন,” রাস্তায় নেমে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে বসে বা তাদের সঙ্গে কথা বলার কোন মানে হয় না। প্রয়োজনে শ্রমিকদের সঙ্গে একসঙ্গে পথ চলতে হয়। তাদের ব্যাগগুলি তুলে ভার লাঘব করতে হয়। ”

সীতারমন আরও বলেছেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে। এর জন্য কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছে। আমরা বিরোধী দলকে অনুরোধ করছেন বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করবেন না। তার কথায় সরকার সবাইকে একত্রিত করে এই সংকটে পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেনচালানোর পাশাপাশি কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিলে তাদের বাড়ি ফেরার সহায়তা করছে। আমরা শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার পথে খাবার, প্রয়োজনীয় জিনিসও দিচ্ছি।”

এদিকে, অবিজেপি দল গুলির এই বৈঠককে তীব্র কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহা। রাজ্য বিজেপির সভাপতি বলেছেন এর আগেও ব্রিগেডে হাত ধরাধরি করেছিল বিরোধী দল গুলি। তারপর এদের অবস্থা কি হয়েছে তা মানুষ দেখেছে। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠক হচ্ছে ভালো, কিন্তু এই বৈঠক কেন আগে করলেন না তারা। এতে হয়ত সাধারণ মানুষ কিছু সুবিধা পেতো। তিনি বলেছেন এই ধরণের বৈঠকে দেখা গেছে বিজেপির ক্ষতির বদলে লাভ হয়েছে। এদিকে এই বৈঠক নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার কটাক্ষ, শুক্রবারের বৈঠক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বের শেষ যাত্রা শুরু হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *