হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ করোনা রোগীর দেহ মিলল পুকুরে

আমাদের ভারত, হাওড়া, ১৬ অক্টোবর: বুধবার রাতে ফুলেশ্বরের কোভিড হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্ত রোগীর দেহ মিলল হাসপাতালের অদূরে একটি পুকুর থেকে। মৃত যুবকের নাম অর্পণ মন্ডল (২৬)। বাড়ি রাজাপুর থানার জোয়ারগোড়ি এলাকায়।

জানাগেছে, গত সোমবার করোনার উপসর্গ নিয়ে ফুলেশ্বরের সঞ্জীবন হাসপাতালে ভর্তি হন অর্পণ মন্ডল। দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার রাতে আচমকা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই যুবক। বৃহস্পতিবার সারাদিন তাকে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পাওয়া যাওয়ার পর শুক্রবার সকালে হাসপাতালের কয়েক মিটার দূরে একটি পুকুরে তার মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়।

এদিকে পুকুরে অর্পণের মৃতদেহ ভাসতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃত যুবকের পরিবারের লোকজন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ঘটনাস্থলে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এবং মৃতদেহ উদ্ধারে বাধা দেয়। অবিলম্বে ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবিতে সরব উত্তেজিত জনতা।

অন্যদিকে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠায় এলাকায় পৌঁছায় উলুবেড়িয়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। নামানো হয় র‍্যাফ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ঘটনাস্থলে পৌঁছান হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়।

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে বিক্ষোভ উঠে গেলেও মৃতদেহ হাসপাতালের সামনে আসতেই পুনরায় মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ বেকার দেখে উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন কয়েকজন মহিলা হাসপাতালের গেট লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। যদিও পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। এখানেও প্রায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পর শেষে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠায়।

এদিকে হাসপাতাল থেকে রোগী পালানোর ঘটনায় তাদের কোনও দোষ নেই বলে জানিয়েছেন সঞ্জীবন হাসপাতালের অধিকর্তা ডাক্তার শুভাশিষ মিত্র। তিনি জানান, আমরা নিজেরা তদন্ত করে দেখেছি ঘটনায় হাসপাতালে নিরাপত্তায় কোনও গাফিলতি ছিল না।তবে যদি পুলিশি তদন্তে আমাদের দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে তারা যা শাস্তি দেবে আমরা সেটা মাথা পেতে নেব। ‌ডাক্তার শুভাশিষ মিত্র জানান, হাসপাতাল থেকে পালানো ওই যুবক শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন। এবং শৌচালয় যাওয়ার নাম করে সাধারণ পোশাক পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় কেউ সন্দেহ করতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *