করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ, ফের বন্ধ হচ্ছে তারাপীঠ মন্দির

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৩০ জুলাই: ফের পুন্যার্থীদের জন্য বন্ধ হতে চলছে তারাপীঠ মন্দিরের দরজা। আগামী ১ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির কমিটি। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে মন্দিরে নোটিশ ঝুলিয়ে বন্ধের বিষয় সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

করোনা আবহে দ্বিতীয়বারের জন্য মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল কমিটি। করোনা ভাইরাস শুরুর সময় ১৮ মার্চ প্রশাসন এবং মন্দির কমিটি বৈঠক করে মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর ২৩ জুন রথযাত্রার পুণ্যলগ্নে ফের পুন্যার্থীদের জন্য মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তবে পুন্যার্থীদের গর্ভগৃহে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মন্দিরের গর্ভগৃহের প্রবেশদ্বারে বাঁশ বেঁধে বাইরে থেকে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। মাসখানেক মন্দির খোলা থাকলেও পুন্যার্থীদের আগমন তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।

১৮ আগস্ট ছিল কৌষিকী অমাবস্যা। কিন্তু পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আগেই মেলা বাতিল করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল ১২ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট মন্দির বন্ধ থাকবে। এদিকে যত দিন যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে জরুরী সভা ডেকে কৌষিকী অমাবস্যার অনেক আগেই মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, “কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা থেকে বহু পুন্যার্থী তারাপীঠে পুজো দিতে আসেন। কিন্তু ওই সমস্ত এলাকায় করোনা ছেয়ে গিয়েছে। কার শরীরে ওই মারন রোগ বাসা বেঁধেছে তা জানা যাচ্ছে না। কেউ ওই রোগ বহন করে মন্দিরে এলে গোষ্ঠী সংক্রমণ হতে পারে। সেবাইতরাও সংক্রামিত হতে পারেন। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্দির বন্ধ থাকলে লক্ষাধিক মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়বে জানি। কিন্তু আগে তো জীবন। তার পর জীবিকা। তাই জীবন বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ৩১ আগস্ট পরিস্থির উপর নজর রেখে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে মন্দিরে নিত্যপুজো যেমন চলছিল তেমনই চলবে। শুধুমাত্র সেবাইতরা মায়ের নিত্যপুজো অংশ নিতে পারবেন”।

মন্দির বন্ধের ফলে মাথায় হাত পড়েছে ফুল বিক্রেতা থেকে প্যাঁড়া বিক্রেতাদের। ফুল বিক্রেতা দেবশঙ্কর দাস বলেন, “মন্দিরে ফুল বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে। তিন মাস বন্ধের সময় চরম অনটনে সংসার চালাতে হয়েছে। মাসখানেক ধরে মন্দির খোলা থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ছিলাম। ফের বন্ধের সিদ্ধান্তে আমাদের মতো মানুষের চরম কষ্ট হবে। কারন মা তারাকে সামনে রেখেই আমাদের যেটুকু উপার্জন হয়”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *