আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৩ অক্টোবর : চিটফান্ড মামলায় রাজ্যে এই প্রথম রায় ঘোষণা করল আদালত। মনোরঞ্জন রায় ও তার স্ত্রী মৌসুমী রায় সহ ৮ জন অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা ধার্য করল তমলুকের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা তৃতীয় আদালত। অভিযুক্তদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে আমানতকারীদের ফেরত দিতে হবে এই রায় আদালতের।
অর্থলগ্নি সংস্থা পিনকনের বিরুদ্ধে করা মামলার তমলুকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা তৃতীয় আদালতে আজ এই মামলার রায় দেন অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক(৩য়) মৌ চট্টোপাধ্যায়। ২০ জন অভিযুক্তর মধ্যে ৮ জনকে দোষী স্যবস্ত করা হয়। এবং তাদের যাবজ্জীবন কারদন্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ৮ জনকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। ১০ জনকে এই মামলায় বেকুসুর খালস ঘোষনা করা হয়। বাকি ২ জনের মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয়। বে -আইনি অর্থলগ্নি সংস্থা পিনকনে টাকা রেখে প্রতারিত হয়েছিলেন অনেকেই। সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের একাংশ পিনকন সংস্থার বিরুদ্ধে খেজুরি থানায় ২০১৭ সালে অভিযোগ দায়ের করেন।
৪/১১/২০১৭ তারিখে রাজস্থান থেকে পিনকনের অন্যতম ডিরেক্টর মনোরঞ্জন রায় সহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ডিরেক্টর অফ ইকোনমিক অফেন্স বা ডিইও-এর আধিকারিকরা। একে একে মনোরঞ্জনের স্ত্রী সহ কুড়িজন ডিরেক্টরকে গ্রেপ্তার করে ডিইও। তমলুক জেলা ও দায়রা আদালতের অধীন অর্থনৈতিক অপরাধের বিশেষ আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়। পরবর্তীকালে মনোরঞ্জনের স্ত্রী মৌসুমী রায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। বিচার পর্ব চলাকালীন দুইজন ডিরেক্টর মারাও যান। বিচারক তার রায়ে পিনকনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৫ হাজার আমানতকারীর ৪৪ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
আজ এই রায় দান ঘিরে তমলুক কোর্ট চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। বহু আমানতকারী ও বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে হাজির হয়েছিলেন আদালত চত্বরে এই রায় শোনার জন্য। আদালতের এই রায়ের তারা খুব খুশি। আমানতকারীদের আশা তারা অবশেষে আদালতের নির্দেশে তাদের জমানো টাকা ফেরত পাবেন।