রাজ্যে কম বয়সীদের মৃত্যুর হার বেশি হওয়ায় উদ্বেগ কেন্দ্রের, চিঠি দিয়ে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ নবান্নকে

আমাদের ভারত, ১৯ জুলাই:রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় করোনার সংক্রমণ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। তার সাথে রাজ্যে কমবয়সীদের মৃত্যুর হারও বেশী। এবার তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল কেন্দ্র। শেষ কিছুদিনে ৫০ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর হার বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করার সাথে সাথে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যুগ্মসচিব লভ আগারওয়াল একটি বড়সড় চিঠি লিখেছেন।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজ্যকে পরামর্শ দিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত কমবয়সীদের মৃত্যুর হার কমাতে উদ্যোগী হতে হবে রাজ্য সরকারকে। এক্ষেত্রে মৃত্যুর হার কমিয়ে ১ শতাংশ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে রাজ্যকে। কারোও শরীরে কোভিড পজিটিভ খবর পাওয়া মাত্র তার সংস্পর্শে আসা ৮০% মানুষকে অপরিহার্যভাবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই চিহ্নিত করে ফেলতে হবে।

চিঠিতে স্বাস্থ্য সচিব লিখেছেন, গত চার দিনে পশ্চিমবঙ্গে গড়ে প্রতিদিন ১৬ জন কোভিড পজিটিভ পাওয়া গেছে। রাজ্যে ৯৩% সক্রিয় কেস রয়েছে মূলত কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনাতে। এছাড়াও ঝাড়গাম, পুরুলিয়া, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলিতেও নতুন করে হটস্পট তৈরি হয়েছে। আর সেই জন্যে লকডাউন করে কনটেইনমেন্ট এলাকাগুলিতে ব্যপক নজরদারি ও ট্রেসিং বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, কলকাতায় যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আরো কার্যকরী কৌশল নিতে হবে সরকারকে। জাতীয় গড়ের তুলনায় রাজ্যে সামগ্রিকভাবে করোনা টেস্টের সংখ্যা এখনোও কম। গত তিন সপ্তাহ ধরে যেভাবে রাজ্যে পজেটিভ কেস বাড়ছে তা সত্যিই উদ্বেগের।

শনিবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৪০ হাজার ২৪৯ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। এখনো পর্যন্ত এই রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০৭৬ জনের। বাংলা এখনো করোনা টেস্টের সংখ্যা জাতীয় গড়ে তুলনায় কম। প্রতি মিলিয়নে ৬৭৯০ জনের টেস্ট হচ্ছে। সেখানে জাতীয় গড়, প্রতি মিলিয়নে ৯৭০০। মাত্র ৭ দিনে রাজ্যে গড়ে পজেটিভ হবার রেট ১৩.১৮ শতাংশ। জাতীয় গড়ের তুলনায় মৃত্যুর হারও রাজ্যে সামান্য হলেও বেশি। মৃত্যুর হারে জাতীয় গড় ২.৫, সেখানে রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর হার ২.৬। রাজ্যের ৬৫০টি কনটেইনমেন্ট রয়েছে।

মৃত্যুর হার ১ শতাংশের কমে নামিয়ে আনতে প্রতি সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। দেখতে হবে কোন হাসপাতালে মৃত্যুর হার কত? কোন কোন এলাকা করোনায় মৃত্যু বেশি হচ্ছে। এছাড়াও রাজ্যে যেহেতু ৫০ বছরের কম বয়সি করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি, তাই ভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করা জরুরি বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *