ফের ডেউচার সেতুতে ফাটল, যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ১৪ অক্টোবর: ফের সেতুতে ফাটল। ফলে সাময়িকভাবে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি সংস্কারে হাত দিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিকল্প সেতু নির্মাণের প্রস্তাব কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের। আবারও ফাটল দেখা গিয়েছে বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার ডেউচার দ্বারকা নদীর উপর সেতুতে। বুধবার সকালে প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দাদের নজর যায় সেতুর ভাঙা অংশে। তারাই বিষয়টি এলাকায় কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের গোচরে আনে। এরপরেই সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই জায়গাটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলে।

খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর সেতুর উপর যান নিয়ন্ত্রণ করা শুরু হয়। সমস্ত পণ্যবাহী ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পণ্যবাহী গাড়ি মল্লারপুর-সাঁইথিয়া হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে ছোট গাড়ি বা যাত্রীবাহী বাস ধীর গতিতে চলাচল করছে সেতুর ওপর দিয়ে।

জাতীয় সড়ক সূত্রে জানা গিয়েছে, জেসপ বলে একটি বহুজাতিক সংস্থা ১৯৫২ সালে দ্বারকা নদীর উপর জলাধার সহ সেতুটি  নির্মাণ করে। জল ধরে রাখার জন্য নদীর ওই জলাধারে মোট দশটি গেট আছে। নিয়মানুযায়ী যে কোনও ধরনের কংক্রিট ঢালাইয়ের ৫০ বছর পর্যন্ত আয়ু থাকে। সেক্ষেত্রে মহম্মদবাজারের ডেউচা সেতুর বয়স প্রায় ৬৮ বছর। ফলে বহু আগেই বিকল্প সেতুর নির্মাণ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন অনেকে। এক সময়ের পানাগর-মোড়গ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক বর্তমানে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি বড় অংশের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম এই রাস্তা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুর অন্য একটি স্থানে চাঙ্গর খুলে পড়েছিল। সে সময় মেরামতির নামে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেতুর ঢালাইয়ের উপর থেকে পিচের স্তর তুলে ফেলে সংস্কারের কাজ শুরু করে। সেতুর উপর লোহার পাত বসিয়ে সংস্কারের কাজ করে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, শুধু সংস্কার নয় বিকল্প সেতু গড়া না হলে যে কোনও মুহূর্তে সেতু ভেঙ্গে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বীরভূমের জাতীয় সড়কের ভারপ্রাপ্ত বাস্তুকার নিশিকান্ত সিং বলেন, “সেতুতে ফাটলের খবর পাওয়া মাত্র আমরা মেরামতির কাজ শুরু করেছি। তাছাড়া এই প্রাচীন সেতুর বিকল্প হিসাবে কর্তৃপক্ষের কাছে আরও একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করা হবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *