বাড়িওয়ালাদের প্রাপ্য কোটি কোটি টাকা উধাও, সিবিআই তদন্তের দাবি

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, কলকাতা, ৪ ডিসেম্বর: বাড়িওয়ালাদের প্রাপ্য টাকা উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করল গৃহমালিকদের সংগঠন দি ক্যালকাটা হাউস ওনার্স অ্যাসোশিয়েশন। সংগঠনের দাবি, “রেন্ট কন্ট্রোল দফতর থেকে কলকাতার বাড়িওয়ালাদের প্রাপ্য ভাড়ার ৪০০ কোটি টাকা স্রেফ উধাও হয়ে গিয়েছে। এর পিছনে রাজনৈতিক মদতপ্রাপ্ত গোষ্ঠী কাজ করছে।”

রবিবার সংগঠনের সম্পাদক সুকুমার রক্ষিত এই অভিযোগ করে বলেন, “বছরের পর বছর এত টাকা কীভাবে, কোথায় গেল, তার বিশদ তদন্ত হওয়া দরকার। সব কিছু ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট চালু করা হচ্ছে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। এই ওয়েবসাইটে বাড়িওয়ালাদের সুবিধা হয়, এমন কোনও ব্যবস্থা নেই। অবিলম্বে রেন্ট কন্ট্রোলের টাকা ফেরৎ দিতে হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে বিতর্কিত ভাড়ার টাকা সরাসরি বাড়িওয়ালার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।”

সম্প্রতি রেন্ট কন্ট্রোল বিভাগ একটি নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, যে সব ভাড়াটিয়ারা রেন্ট কন্ট্রোলে টাকা জমা দেন তাঁরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টাকা জমা দেবেন। এর জন্য টাকা জমা পড়লে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া — উভয়েই মোবাইলে নোটিফিকেশন পাবেন। সুকুমার রক্ষিতের বক্তব্য, “ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দফতর কম্পিউটারের মাধ্যমে নথি রাখতে চাইছে তা এই বিজ্ঞপ্তি থেকেই স্পষ্ট। কিন্তু কেন? আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে নির্দিষ্ট করে বলেছি, রেন্ট কন্ট্রোলে কত টাকা জমা আছে তার সঠিক কোনও হিসাব নেই। ওই দফতরের শৌচাগারের পাশে স্তূপীকৃত পুরনো চালান পড়ে থাকে। উই লেগে, বৃষ্টির জলে বহু পুরনো চালান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাড়িওয়ালারা যে কারণে বিধিবদ্ধ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেও দীর্ঘদিন কোনও টাকাপয়সা পান না।

কোটি কোটি টাকা রেন্ট কন্ট্রোল অফিসে জমা পড়ে বটে, কিন্তু তার কোনও হিসাব থাকে না। আমাদের মতে, রেন্ট কন্ট্রোল দফতর থেকে কলকাতার বাড়িওয়ালাদের প্রাপ্য ভাড়ার ৪০০ কোটি টাকা স্রেফ উধাও হয়ে গিয়েছে। এর পিছনে রাজনৈতিক মদতপ্রাপ্ত গোষ্ঠী কাজ করছে। বর্তমানে পাঁচ বছর আগের চালান অনুযায়ী টাকা দেওয়া হচ্ছে, তা-ও সবাই এই টাকা পাচ্ছেন এমনটা নয়।

অনেকেই দিনের পর দিন রেন্ট কন্ট্রোল অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থেকেও ১০-১৫ বছরের পুরনো বাড়িভাড়ার টাকা হাতে পাচ্ছেন না। কম্পিউটার চালু হলে এই টাকা প্রদানে সুবিধা হবে এমনটা নয়। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, রেন্ট কন্ট্রোল অফিসের দেওয়া ৪০০ টাকার চেকও বাউন্স করেছে। বাড়িওয়ালাদের প্রাপ্য টাকা কীভাবে, কোথায় উধাও হয়ে গেল, তার সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন।“

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *