আবারও এশিয়ান হাইওয়েতে গতির বলি বুনো হাতি, উদ্বিগ্ন বনকর্তারা

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৫ ডিসেম্বর: লেপার্ড ক্যাটের পর এবার বুনো হাতি। দ্রুত গতির গাড়ির ধাক্কায় এবার বেঘোরে প্রাণ দিতে হল একটি বুনো হাতিকে। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টা নাগাদ এশিয়ান হাইওয়ের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া মাদারিহাটের খয়েরবাড়ি এলাকায় শিলিগুড়িগামী একটি ট্রাকের ধাক্কায় মারা পড়ল একটি পূর্ন বয়স্ক মাখনা হাতি। সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই ছিল যে হাতিটিকে ধাক্কা মারার পর প্রায় ১৫মিটার দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে নিয়ে যায় ট্রাক চালক। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রচন্ড যন্ত্রণায় রাস্তার ধারে পরেই কাতরাতে থাকে বন্যপ্রানীটি।

ঘটনার পর ছুটে আসে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহ বন্যপ্রাণ সহায়ক দেবদর্শন রায়। আসেন চিকিৎসকরা। রাত সাড়ে ১১টা থেকেই হাতিটির চিকিৎসাও শুরু হয়। তবে মঙ্গলবার ভোরবেলা হাতিটির মৃত্যু হয়। ঘটনার জেরে এদিন সকাল থেকেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বনকর্তারা। জানা গেছে, জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ধুমচিপাড়া থেকে খয়েরবাড়ি হাতির পরিচিত করিডোর।দিনেরাতে হাতির দল বছরভর জাতীয় সড়ক পারাপার করে। যেখানে ঘটনাটি ঘটে সেখানে একবছর আগেই বনদপ্তর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নিরাপত্তাজনিত স্পিড ব্রেকার লাগানোর কথা জানিয়েছিল। তবে তা কার্যকর হয়নি।

জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, জলদাপাড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এশিযান হাইওয়ে। আমরা মাদারিহাট থেকে সাঁতালি চা-বাগানের মাঝে ৪টি এলাকা চিহ্নিত করে জানিয়েছি সড়ক কর্তৃপক্ষকে। হলং ব্রিজের কাছে একটি পয়েন্টে একটি টেবিল টপ স্পিড ব্রেকারের কাজ করেছে সড়ক কর্তৃপক্ষ। সেখানে কোনও দুর্ঘটনা হয়নি। বাকি তিনটি পয়েন্ট এ দ্রুত কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এদিকে, শিলিগুড়ি গামী ট্রাকটি হাতিকে ধাক্কা দিয়েই রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তবে দ্রুত ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে ময়নাগুড়ি গিয়ে ট্রাকটিকে ধরে ফেলে বনদপ্তরের কর্মীরা। ট্রাকের চালক খালাসিকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়।

দেবদর্শন রায় বলেন,”মাত্র ১৫ কিমির একটা রাস্তা। দুপাশে গভীর জঙ্গল। একটু সচেতন হয়ে মানুষ গাড়ি চালাতে পারে না? সারারাত চেষ্টা করেও প্রাণীটিকে বাঁচাতে পারিনি।” উল্লেখ্য, গত ৪ বছরের হিসেব ধরলে সাঁতালি চা বাগান থেকে মাদারিহাটের মাঝখানে দ্রুত গতির গাড়ির ধাক্কায় ৫টি সম্বর হরিণ, ৩টি বাইসন, ৬টি বনবিড়াল, অগুনতি বানর সহ বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here