
আমাদের ভারত,২৭ ফেব্রুয়ারি: দিল্লি সংঘর্ষের নৃশংসতা সীমা মাত্রা ছাড়িয়েছে। পাথর, ইঁট, গুলির পর এবার অ্যাসিড হামলা চলছে সেখানে। পুলিশও অ্যাসিড হামলার শিকার। আর এর থেকে স্পষ্ট অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই এই হামলা চলছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৪, আহত ২০০-র বেশি।
কারোর মাথায় গুরুতর চোট, কারোর শরীরে বুলেটের ক্ষত। এরই মধ্যে আরো একটি উদ্বেগজনক বিষয় মুস্তাফাবাদ থেকে বেশ কিছু আহত যারা হাসপাতালে এসেছেন তারা অ্যাসিড আক্রান্ত। অনেকের চোখে অ্যাসিড ঢালা হয়েছে। দৃষ্টি হারিয়েছেন চারজন। একজনের দুটি চোখ সহ মুখ ঝলসে গেছে অ্যাসিডে। হামলার নৃশংসতা সীমা ছাড়িয়েছে।
আগুন লাগানো, পাথর, ইট বৃষ্টি, গুলি এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অ্যাসিড হামলা। আর তা থেকে স্পষ্ট সবটাই যথেষ্ট পরিকল্পিত ভাবেই হচ্ছে। সলিসিটর জেনারেল তুশার মেহতা দিল্লি হাইকোর্টকে জানিয়েছে পুলিশকেও অ্যাসিড হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে।
সিএএ বিরোধী ও সমর্থনকারীদের সংঘর্ষে দিল্লিতে মৃত্যু মিছিল এখনো অব্যাহত। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪। জাফরাবাদ ও মৌজপুর শুনশান। অথচ এই জাফরাবাদ মৌজপুর থেকে শুরু হওয়া অশান্তিই রণক্ষেত্র চেহারা নিয়েছে দিল্লি। জোহরাপুরি ভজনপুরা আবারও নতুন করে হয়েছে দাঙ্গা। উত্তর প্রদেশ লাগোয়া জোহরাপুরীতে পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের সংঘর্ষ হয়। রাতে ভজনপুরা থেকে আটকে পড়া বেশ কিছু মানুষের ফোন পেয়েছে পুলিশও স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে। গভীর রাতে ব্রহ্মপুরী ও মুস্তাফাবাদ থেকে খবর এসেছে সেখানে অশান্তি শুরু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০০–র উপরে।
জাফরাবাদ মৌজপুর প্রায় শ্মশান। ফাঁকা রাস্তা জুড়ে কেবল পাথর, ইট ভাঙ্গা, কাঁচ ভাঙ্গা, লোহার রড। একাধিক জায়গা থেকে কুন্ডলী পাকিয়ে কালো ধোঁয়া উঠছে আকাশের দিকে। এক পাড়ায় ধর্মের জোরে যাদের দোকান বেঁচেছে অন্য পাড়ায় সেই ধর্মের জেরেই দোকান পুড়েছে। জাফরাবাদের এক বাসিন্দার মন্তব্য, ভিতরের মহল্লায় চলছে অশান্তি। কতজনের দেহ যে পড়ে রয়েছে কেউ জানে না। পুলিশ এখনও ঢুকতে পারেনি ভেতরে। চাঁদবাগে নর্দমা থেকে উদ্ধার হয়েছে আইবি অফিসারের আমার দেহ। সেখানে আরও ২টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। একাধিক বাড়ির ছাদ থেকে পাথর, পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তেগ বাহাদুর লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন হতাহতদের বেশিরভাগই গরীব কিংবা মধ্যবিত্ত।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে এখনো পর্যন্ত ১৮টি এফআইআর হয়েছে গ্রেফতার হয়েছে ১০৬ জন। নিহতদের আত্মীয়দের দু’লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার।