স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১৪ মে: আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করেছে পুরনো কাউন্সিলর। এখনো ঘরের টাকা নিয়ে দালালি চলছে। এবার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলো এলাকাবাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর পৌরসভায়।
শুক্রবার শান্তিপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দারা শান্তিপুর পৌরসভায় এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে সরকারি আবাস যোজনার ঘর পেলেও টাকার অভাবে সম্পূর্ণ করতে পারেনি তারা। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাধব সরকার ও তার ছেলে মনোজ সরকার তাদের ভুল বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে অ্যাকাউন্ট বই নিয়ে সই করিয়ে নিয়ে সব টাকা তুলে নিয়েছে। শুধু তাই নয় দীর্ঘদিন ধরেই ঘর তৈরি শুরু হলেও তা সম্পূর্ণ না হয়ে পড়ে রয়েছে। ঘর সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে তারা সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ তাদের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কিভাবে আবাস যোজনার প্রাপকদের টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যরা তুলে নিতে পারে? এই অভিযোগ নিয়ে প্রায় শতাধিক বাসিন্দা শুক্রবার শান্তিপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত ডেপুটেশন দিতে আসে। যদিও এদিন পৌরপতি পৌরসভায় না থাকার কারণে তাঁর কোনো রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিরা রানী ঘোষ জানান, গত তিন বছর ধরে তিনি কাউন্সিলরের বাড়িতে বহুবার গেছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। তার অভিযোগ, “সেই সময়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মাধব সরকার ও তার ছেলে মনোজ সরকার সরকারি ঘর করে দেবে বলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ ব্যাঙ্কের বই নিজের কাছে রেখে দিয়ে তাকে ভুল বুঝিয়ে সই করিয়ে তার প্রাপ্য টাকা আত্মসাৎ করেছে। পাশাপাশি তার আক্ষেপ কমিশনারের হাতে সব টাকা পয়সা। আমাদের হাতে টাকা দিলে হয়তো আমরা ঘরটা করতে পারতাম”।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুদিপাড়া স্ট্রিটের বাসিন্দা উত্তম দেবনাথ বলেন, “আমি ২০১৯ সালে সরকারি ঘর পেয়েছি। পাড়ায় পনেরোটা ঘর তৈরির দায়িত্ব ছিল তৎকালীন কাউন্সিলর মাধব সরকারের। তিন বছর আগে আমার ঢালাইয়ের টাকা ঢুকেছিল কিন্তু ঘর সম্পূর্ণ হয়নি। কাউন্সিলরের বাড়ি গেলে বলে করে দিচ্ছি করে দেব। সেন্টারিং করেছিল, সেই সেন্টারিংয়ের কাঠ পচে পড়ে গেছে তারপর আর কোনো খবর নেই। মিস্ত্রিদের বললে বলে আমরা কি করব? কাউন্সিলরের বাড়িতে গেলে বলে হচ্ছে, হবে। টাকাটা পুরোপুরি ওরা চেপেই দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে পৌরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করলে পৌরসভায় জানায় কাউন্সিলরের বাড়িতে যেতে। কাউন্সিলর মাধব সরকারের কাছে গেলে কাউন্সিলর বলে আমার ছেলে মনোজের কাছে যাও ওর সঙ্গে গিয়ে কথা বলো। মনোজ বাড়িতে না থাকায় মনোজের স্ত্রী আমাকে বলে হচ্ছে হবে। তারপর থেকে এখনো ওরা আমাকে আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে”।