বাংলায় সিএএ লাগু হলে দিদির অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে যাবে: কৈলাস বিজয়বর্গীয়

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১০ জানুয়ারি: সিএএ ইস্যুতে রাজ্যের তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধনা করলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পুরুলিয়ার ঝালদায় দলীয় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিএএ ইস্যুতে রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার কঠোর সমালাচনা করেন তিনি।

কৈলাস বলেন, ‘দিদি দলিত সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন না। অনুপ্রবেশকারিদের নিয়ে গড়া ভোট ব্যাংক ফসকে যাওয়ার জন্য সিএএ’র বিরোধীতা করছেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতারিত, নির্যাতিত অত্যাচারিত হয়ে এই দেশে এসেছে মতুয়া সমাজ। তাঁদের কেন দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না? বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগনিস্তানে যে হিন্দু ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত পীড়িত হচ্ছেন তাহলে তাঁরা কোথায় যাবেন? ভারত বর্ষ ছাড়া আর কি কোনও হিন্দুরাষ্ট্র আছে? মোদিজি ওই সব মানুষকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন আইনিভাবে।‘ 
   
দলীয় সাংসদ এবং কার্যকর্তাদের হেনস্থা করলে পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। ঝালদায় সাংসদকে হেনস্থা করার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানান তিনি।

ঝালদায় সাংসদ, জেলা সভাপতি সহ দলীয় কার্যকর্তাদের একাধিক মামলায় ফাঁসানো এবং হেনস্থার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি করে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি। ঝালদা শহরে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে প্রতিবাদ মিছিল হয়। সেখানে অংশ নেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছাড়াও সাংসদ ডা. সুভাষ সরকার, অর্জুন সিং, কুনার হেম্ব্রম, পুলিশি হেনস্থার শিকার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী প্রমুখ।

প্রায় এক কিলোমিটার প্রতিবাদ মিছিলের পর স্থানীয় হাটতলা ময়দানে একটি পথসভাতেও যোগ দেন তাঁরা।বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির নেতারা চুড়ি পড়ে নেই, প্রতিটি ইটে ইটে জবাব দেব। একটি কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তার মানে এই নয় যে আমরা মর্যাদা ভাঙতে জানি না। মর্যাদা ভাঙতে জানি। তবে আমরা অটল বিহারী পজপেয়ীজি, আদবানিজি, নরেন্দ্র মোদিজি, অমিতজির দলের সদস্য। আমরা গণতন্ত্রকে মর্যাদা দিতে জানি।’ একই সঙ্গে তিনি দলীয় কার্যকর্তাদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আপনারা দলীয় কর্মসূচি ও কাজ করুন। আপনাদের সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব রয়েছে। যে আধিকারিক বদমাইশি করছেন তাঁদের তালিকা করে রাখুন। ২০২১ বিধান সভা নির্বাচনের পর ওঁদের শায়েস্তা করার কাজ আমরা করব।’
   
এদিন সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আর ভাইপো ছাড়া এই তালিবানী মহিলার সঙ্গে কেউ নেই। আপনার লজ্জা লাগছে না, এক দিন সিএবি র জন্য আন্দোলন করেছিলেন। আর আজ সিএএ র বিরোধীতা করছেন?’
   
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ঝালদায় দলীয় একটি মিছিল ও স্মারকলিপি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সহ বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সময় পুলিশ তাঁদের আটকে দেয় এবং হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। এছাড়া সাংসদ সহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করে পুলিশ। এদের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার হয়। তারই প্রতিবাদে এদিন কর্মসূচি ছিল বিজেপির।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *