আমাদের ভারত, দিঘা, ১২ জুন: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আড়াই মাস আগে দিঘা সহ আশেপাশের সৈকত এলাকাগুলিতে পর্যটকদের আনাগোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।দীর্ঘ আড়াই মাস পর বৃহস্পতিবার সরকারি নির্দেশিকা মেনে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দিঘার সমুদ্র সৈকত। তবে পর্যটকদের সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার হোটেলগুলি খুললেও তেমনভাবে পর্যটকদের দেখা মেলেনি দিঘার সৈকতে। প্রথম দিন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন পর্যটক দিঘার সৈকতে এলেও ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন হোটেল মালিকরা।
কয়েকমাসের লকডাউনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সৈকত এলাকার পর্যটনশিল্প একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পর্যটক না আসায় হোটেল মালিকদের আয় একেবারে বন্ধ হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে দিঘার হোটেলগুলো খুলে যাওয়ায় ধীরে ধীরে পর্যটন ব্যবসা পুনরায় চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন হোটেল মালিকরা। এই মুহূর্তে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়লেও আগামী দিনগুলিতে লাভের মুখ দেখবেন বলে মনে করছেন। বৃহস্পতিবার থেকে দিঘার পাশাপাশি শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকতও খুলে দেওয়া হয় পর্যটকদের জন্য। তবে সেখানেও পর্যটকদের সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা মাত্র। কয়েকদিন আগেই মন্দারমণি সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও পর্যটকদের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। বুধবার বিকেলে দিঘা- শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে দিঘা ও শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই মুহূর্তে সমস্ত হোটেল না খুললেও ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি কড়াভাবে মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
কোনও পর্যটক জ্বর, সর্দি- কাশি নিয়ে হোটেলে এলে তার অগ্রিম বুকিং থাকলেও তাকে ঘর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে হোটেল কর্তৃপক্ষ। করোনা নিয়ে কোনও পর্যটকের উপর হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ থাকলে কর্তৃপক্ষ তাকে থাকতে নাও দিতে পারে। হোটেল কর্মী থেকে পর্যটক সবার ক্ষেত্রেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও হোটেলে ঢোকার সময় থার্মাল স্ক্রিনিং করে পর্যটকদের ঢোকাতে হবে। ইতিমধ্যে দিঘা ও শঙ্করপুর এলাকার হোটেলগুলি অনলাইনে বুকিং পরিষেবা চালু করা হলেও পর্যটকদের বুকিং তেমন হারে নেই। তবে হাতেগোনা যে পর্যটকরা আসছেন তারা স্পট বুকিং করছেন সরাসরি হোটেলে গিয়ে।
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম- সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে ৩০% হোটেল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে ধীরে ধীরে সমস্ত হোটেল খুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে।”
এই মুহূর্তে দিঘার গ্রামের দিকের হোটেল গুলি খুলছে না। দিঘা- শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র বলেন, “এত তাড়াতাড়ি আমরা গ্রামের দিকের হোটেলগুলি খুলছি না। তবে যে ৩০% হোটেল খুলছে তাতে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে”। সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবার দিঘার
হোটেলগুলি খুললেও তেমন ভাবে পর্যটক নেই। আগামী দিনে পর্যটক সমাগমের আশায় বুক বাঁধছেন হোটেল মালিকরা।