ডুয়ার্সের পর্যটনকে আকর্ষনীয় করে তুলতে শুরু হল ডুয়ার্স ট্যুরিজম এন্ড কালচারাল কার্নিভাল-২১, প্রথমদিনে মাতলেন পর্যটকরাও

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১২ জানুয়ারি: করোনা আবহের পরবর্তীতে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যাবসাকে ঘুরে দাঁড় করাতে ও পর্যটকদের আকর্ষনের জন্য ডুয়ার্সে এই প্রথম বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়াতে শুরু হয়েছে ডুয়ার্স ট্যুরিজম এন্ড কালচারাল কার্নিভাল–২০২১। একইসাথে আলিপুরদুয়ার জেলায় ৫৬টি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক চর্চা, জীবনযাপনের নানা আঙ্গিক রাজ্য তথা দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরাও কার্নিভালের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এই কার্নিভাল। আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্নপ্রান্তে আগামী ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রতিবছর একই সময় এই কার্নিভাল নতুন নতুন পর্যটনস্থলে চলবে যাতে রাজ্য তথা দেশ-বিদেশের পর্যটকরা এই কার্নিভালে অংশ গ্রহন করতে ডুয়ার্স আসতে পারে।

কালচিনি ব্লকের রাজাভাতখাওয়াতে অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম সহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে এই কার্নিভাল শুরু হয়েছে। প্রথমদিনই শহরের কোলাহল থেকে ডুয়ার্সে জঙ্গলে বেড়াতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও এই কার্নিভালে যোগ দিয়েছেন। পর্যটকরা কার্নিভালে ডুয়ার্সের জনজাতি গোষ্টীগুলির লোকায়ত সংস্কৃতির বাড়তি স্বাদ পেয়ে যথেষ্টই খুশি।

উদোক্তাদের থেকে জানা গেছে, আগামী ১৫ দিন টানা এই কার্নিভাল চলবে। এদিনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া লিগাল এইড ফোরাম এন্ড অল ইন্ডিয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি জয়দীপ মুখার্জি, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, কালচিনি থানার ওসি অনির্বান মজুমদার বিশিষ্ট সমাজসেবি বিশাল লামা সহ অনান্য ব্যাক্তিরা।

জানা গেছে, রাজাভাতখাওয়ার পর এই কার্নিভাল চলবে অন্যন্য পর্যটন কেন্দ্র– পোরো, রাঙ্গামাটি, রায়মাটাং,২৮বস্তি, সান্তালাবাড়ি, বক্সা ফোর্ট, জয়ন্তি, গাঙ্গুটিয়া চা-বাগানে। প্রথমবর্ষ কার্নিভালের সমাপ্তি অনুষ্ঠান হবে সকলের পরিচিত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে।অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড টুরিজমের সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, “করোনার জন্য মুখ থুবড়ে পড়েছিল পর্যটন ব্যবসা। তবে নিউ নর্মাল পর্বে ধীরে হলেও পর্যটকরা বেড়াতে আসছেন। পর্যটকরা ডুয়ার্স মানে বোঝেন জঙ্গলের হাতেগোনা নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থান।আমরা তাদের সেই ধারনার পাশাপাশি নতুন নতুন পর্যটন স্থানগুলি তুলে ধরব এবং আরও আকৃষ্ট করবার পাশাপাশি ডুয়ার্সের জনগোষ্ঠীগুলির সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ছড়িয়ে দিতেই এই কার্নিভালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

কার্নিভালের প্রথম দিনই জঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলির লোকায়ত সঙ্গীত, নৃত্য থেকে বাদ্যযন্ত্রের ব্যাবহার দেখে। হাওড়া থেকে আসা তিনবন্ধু স্বর্নাভ চক্রবর্তী, প্রলয় চট্টোপাধ্য্যায় ও শুভজিৎ ভট্টাচার্য এদিনের কার্নিভালে যোগ দিয়েছেন। প্রনয়বাবু জানান, “এভাবে জঙ্গল বেড়াতে ও ছবি তুলতে এসে যে বাড়তি আনন্দ মিলবে তা জানা ছিল না। খুবই ভালো উদ্যোগ। এই ধরনের কার্নিভাল ডুয়ার্সের জঙ্গল, পর্যটনস্থল থেকে শুরু করে স্থানীয় জনজাতিদের প্রতি আকর্ষন বাড়াবে।” প্রতিদিন এই কার্নিভালে জেলার ৫৬টি জনজাতির শিল্পীরা যোগ দেবেন। জলদাপাড়ায় সমাপ্তি অনুষ্ঠানকে আরও জমকালো করবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here