করোনা আতঙ্কে পুলিশের ব্রেথ অ্যানালাইজার নিয়ে প্রশ্ন তুলে পোয়াবারো মদ্যপ গাড়িচালকদের

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ৮ মার্চ: কথায় বলে কারও সর্বনাশ তো কারোর পৌষমাস! করোনা আতঙ্কে কার্যত লাভ হয়েছে মদ্যপ গাড়িচালকদের। আর ফাঁপরে পড়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি এমনই, কি ভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, তার কোনও কুলকিনারা ভেবে পাচ্ছেন না খোদ পুলিশকর্তারাই।

প্রসঙ্গত, রাত বাড়লেই শহরের রাস্তায় শুরু হয়ে যায় মদ্যপ গাড়িচালকদের দাপাদাপি। আর এই গাড়িচালকদের আটকাতে পুলিশের অস্ত্র ব্রেথ অ্যানালাইজার যন্ত্র। রাস্তায় গাড়ি আটকে ওই যন্ত্রে ফুঁ দিতে বলা হয়। তাতে পজিটিভ মনে হলেই গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আর এখানেই নতুন তত্ত্ব খুঁজে পেয়েছেন গাড়িচালকরা। এমনিতেই যন্ত্রের ফুঁ দেওয়ার অংশ পরিষ্কার হয় না বলে অভিযোগ ছিল অনেক দিনের। নতুন কথা উঠেছে, এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। আর সেই ‘অজুহাত’ দেখিয়ে কেউ ফুঁ দিতে চাইছেন না এই যন্ত্রে।বাইক চালক হোন বা গাড়িচালক, ধরতেই সাফ প্রশ্ন, ‘এই যন্ত্রে ফুঁ দিলে করোনা আক্রান্ত আমি হব না, তার গ্যারান্টি কী।’

কয়েকদিন আগে মানিকতলায় এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি সামলাতে লিখিত আশ্বাস দেওয়ার পর তিনি ফুঁ দেন। তার ক্ষেত্রে কিছু না বেরোলেও এই প্রবণতা বেড়ে গেলে মৌচাকের ঢিলে কাঠি পড়বে বলেই মত পুলিশকর্তাদের।

পুলিশকর্তারাও মনে করছেন, এর জেরে মদ্যপান করে বাইক বা গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে যে অভিযান, তা আটকে যাবে। করোনা আতঙ্কের এই অজুহাতে বেপরোয়া যান চালিয়ে বাড়বে দুর্ঘটনা। তাতে ধাক্কা খেতে পারে শহর কলকাতার রাতের নিরাপত্তাই। কোনও ভাবেই এই প্রবণতা বাড়তে দেওয়া যাবে না।

লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, ‘এই যন্ত্রগুলি প্রতিদিনই নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। তার ফলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে এই অজুহাতে ফুঁ দিতে না চাইলে আমাদের হাতে অন্য উপায় রয়েছে। মদ্যপ বুঝলে কোনও না কোনও উপায়ে আটকানো হবেই। একই সঙ্গে এই নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালালে সমস্যা মিটে যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *