প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ঝাড়গ্রাম জেলার নদীগুলিতে জল বেড়ে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি, বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ৩০ জুলাই: নিম্নচাপের জেরে ঝাড়গ্রাম জেলায় বুধবার রাত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভারি বর্ষণ। আর এই নিম্নচাপের বৃষ্টির ফলে জেলার নদীগুলিতে জল বাড়তে শুরু করেছে। জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর উপর কজওয়েতে জল উঠে যাওয়ায় জেলা শহরের সাথে জামবনী ব্লকের বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যার ফলে গিধনী, পড়িহাটি, চিচিড়া, ঘুঁটিয়া সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজনকে জেলা শহরে আসতে হলে অনেকটা ঘুরপথে আসতে হবে।

অন্যদিকে সুবর্ণরেখা নদী ও স্থানীয় খালের জলস্তর বাড়ছে। যার ফলে সুবর্ণরেখা নদীতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই নদী তীরবর্তী গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার রাত থেকে শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দিনভর কখনো তীব্র গতিতে আবার কখনো ঝিরঝির টানা বৃষ্টিপাত চলছে ঝাড়গ্রাম। তবে ঝাড়গ্রাম জেলার নদীগুলির জল এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে না গেলেও নদীতীরর্তী এলাকাগুলিতে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ঝাড়্গ্রাম জেলার সুবর্ণরেখা, ডুলুং, তারাফেনি, কংসাবতী নদীর জল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।

এদিকে আবার ঝাড়খন্ডের গালুডি জলাধার থেকেও একটু একটু করে জল ছাড়া শুরু করেছে। যদি গালুডি জলাধার থেকে একটু বেশি পরিমাণ জল ছাড়ে তাহলে সুবর্ণরেখা নদীতে জল স্তর অনেকটাই বেড় যাবে। সে ক্ষেত্রে জল বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।

প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, সুবর্ণরেখা নদীতে বর্তমানে ৩৭ মিটারের উপরে জল বইছে। ৪৫ মিটারের উপরে হলেই জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বয়ে যাবে। এদিন ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি যে কোনও ধরনের পরিস্থিতির জন্য ব্লকের ফ্লাড
সেন্টারগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে। তবে যেভাবে বৃষ্টি চলছে তাতে আর কয়েক ঘন্টা টানা বৃষ্টিপাত হলে তারাফেনি ও ডুলুং নদীর মতো জেলার বিভিন্ন নদী ও স্থানীয় খাল গুলিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হবে বলে আশঙ্কা।

এবিষয়ে গোপীবল্লভপুর এক ব্লকের বিডিও দেবজ্যোতি পাত্র বলেন, “গত দুদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে আর ওদিকে গালুডি জলাধার থেকে একটু একটু করে জল ছাড়ার ফলে সুবর্ণরেখা নদীতে জল স্তর কিছুটা বেড়েছে। তবে জল বিপদসীমার নীচ দিয়ে বইছে। আমরা সতর্কতামূলক সবরকম ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। ফ্লাড সেন্টার বা ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় নজরদারি রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *