আমাদের ভারত, ২২ সেপ্টেম্বর: আর শুধু পেট্রোল-ডিজেল নয়, এবার বিদ্যুতের সাহায্যেই ছুটবে গাড়ি, বাস, ট্রাক। তার জন্য তৈরি হচ্ছে উপযুক্ত রাস্তা। হ্যাঁ দিল্লি থেকে রাজস্থানের জয়পুর যাওয়ার জন্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিন জাতীয় সড়ক বানাচ্ছে কেন্দ্র। এমনটাই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়করি। বৈদ্যুতিন জাতীয় সড়ক তৈরীর দুটি লক্ষ্য রয়েছে। বৈদ্যুতিন গাড়ি চলার এই রাস্তায় পণ্য পরিবহনের খরচ অনেক কমবে এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা যাবে।
বৈদ্যুতিন জাতীয় সড়ক বা ইলেকট্রিক হাইওয়ে হলো সেই রাস্তা যার উপর দিয়ে বৈদ্যুতিন যানবাহন চলবে। যেমন বৈদ্যুতিন ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফের মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তি ও চলার গতি পায় ট্রেন, ঠিক তেমনি ভাবেই বৈদ্যুতিন জাতীয় সড়কের উপরেও বৈদ্যুতিক তার থাকবে। বাস, ট্রাক, গাড়িতে, প্যান্টোগ্রাফ-এর মতো ব্যবস্থা থাকবে। যার সাহায্যে ইলেকট্রিক তার থেকে চলার শক্তি সংগ্রহ করবে বাহন গুলি। এছাড়াও সড়কের কিছুদূর অন্তর চার্জিং স্টেশন থাকবে। সেখানেও গাড়ি চার্জ করে নিতে পারবেন চালকরা।
২০০ কিলোমিটার রাস্তায় একটি লেন শুধুমাত্র বৈদ্যুতিন হবে। ওই লেনে শুধু বৈদ্যুতিন গাড়ি চলবে। পণ্য পরিবহনের খরচের কমানোর কথা মাথায় রেখে এই ধরনের রাস্তা তৈরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার দাবি এর ফলে ৭০% খরচ কমবে।
ইতিমধ্যেই এর জন্য একটি সুইডেনের সংস্থার সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে। সারা বিশ্বে তিন ধরনের প্রযুক্তিতে এধরণের সড়ক তৈরি হয়েছে। সুইডেনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে ভারতেও সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করার কথা চলছে। সুইডেনে প্যান্টোগ্রাফ মডেল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কনডেশন মডেল ব্যবহার হয়। এই কনডেশন মডেলে রাস্তার নিচে বৈদ্যুতিক তার থাকে। গাড়ির নিচে লাগানো প্যান্টোগ্রাফের সঙ্গে ওই তারের সংযোগে শক্তি উৎপন্ন হয়, যা গাড়িকে চলতে সাহায্য করে। তৃতীয়টি হলো ইন্ডাকশন মডেল। এই প্রযুক্তি তারবিহীন। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিদ্যুতের সাহায্যে গাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। সুইডেন এবং জার্মানিতে হাইব্রিড গাড়ি চলে। সেগুলি বিদ্যুৎ ও পেট্রোল-ডিজেল সবকিছুতেই চলে।
২০১৬ সালে সুইডেনে প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে বৈদ্যুতিন রাস্তার ব্যবহার শুরু হয়। ২০১৮-য় আনুষ্ঠানিকভাবে তার ব্যবহার শুরু হয়। শুধু সুইডেন নয় জার্মানিতেও এই ধরনের রাস্তা রয়েছে। বিশ্বের এই দুই দেশের পর এবার ভারতেও বৈদ্যুতিন সড়ক তৈরি হতে চলেছে মোদী সরকারের উদ্দ্যোগে।