আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৭ সেপ্টেম্বর: ইউনেস্কো বিশ্বভারতীকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা দেওয়ার পর আনন্দ উচ্ছ্বাসের উৎসব বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব টুইটার হ্যাণ্ডেল থেকে এই ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা আশ্রমিক সবাই আনন্দে মেতে ওঠেন। আগামীকাল সোমবার সন্ধে ছ’টায় উপাসনা গৃহে আনন্দ উৎসব পালন করবে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ট্রাস্টের সদস্য ছাড়াও ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষকরা। ইউনেস্কোর ঘোষণার পর বিশ্বভারতীর তরফে উপাচার্য সহ অন্যান্য আধিকারিক এবং বিভিন্ন ভবনের আধিকারিকরা ছাতিম তলায় প্রদীপ প্রজ্বলনের জন্য হাজির হন।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ছাতিম তলায় প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে আনন্দ উৎসবের সূচনা হবে। তারপর যথারীতি বিভিন্ন অনুষ্ঠান সূচির ঘোষণা করা হবে।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ২০০৭ সাল থেকে High Level committe -র পরামর্শ মতো শান্তিনিকেতনকে হেরিটেজ করার জন্য আেবদন শুরু হয়। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন সবাই উদ্যোগী হন। বাফার জোন ও সার্বিক পরিকল্পনা কেমন হবে এনিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। প্রায় ১০ বছর লাগলো। আমি এখান থেকে পুস্তিকাটি সাতটি ভাষায় অনুবাদ করে পাঠিয়েছি। ASI আমাকে অনুরোধ করেছিল।
আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, খুবই আনন্দের খবর। বিশ্বভারতীর দায়িত্ব বেড়ে গেল। এটা বজায় রাখতে হবে। আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, খুবই আনন্দের খবর। বিশ্বভারতীকে এর সুযোগ সুবিধা সঠিকভাবে গ্রহণ করে তার সদব্যবহার করতে হবে। ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
অবশ্য টুইট করে আগেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। তিনি বলেন, এবছরের সেপ্টেম্বর মাসে আরবে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে “ওয়াল্ড হেরিটেজ” ঘোষণা করে হবে। এই প্রথম কোনো লিভিং বিশ্ববিদ্যালয় এই তকমা পেতে চলেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই খুশি শান্তিনিকেতনবাসী।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফেও বিশ্বভারতীকে মৌখিকভাবে একথা আগেই জানানো হয়, বলে জানান ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চলতি বছরের ২৮ মার্চ সমাবর্তনে স্বাগত ভাষণে জানান, এক মাসের মধ্যে ওয়ার্লড হেরিটেজ তকমা পেতে চলেছে। বিশ্বভারতীর আবেদনের ভিত্তিতে ২০২১ সালের পঁচিশে অক্টোবর ইউনেস্কোর সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বিশ্বভারতী পৌঁছায়। সর্বেক্ষণ বিভাগের সঙ্গে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক হয়। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান শান্তিনিকেতন গৃহ, উপাসনা গৃহ, ঘন্টা তলা, কলাভবন, সঙ্গীত ভবন, রবীন্দ্রভবন, তালধ্বজ, ছাতিমতলা, গৌরপ্রাঙ্গণ প্রভৃতি ঘুরে
দেখেছিলেন৷
বিশ্বভারতীর পড়ুয়া শুভ নাথ ও ঐন্দ্রিলা মল্লিক বলেন, “এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের৷ গুরুদেবের যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করি তা ওয়াল্ড হেরিটেজ এটা ভেবে। কিন্তু পাশাপাশি শিক্ষার মান নিয়েও উপাচার্যকে ভাবতে হবে৷”