আমাদের ভারত, ২০ জানুয়ারি:করোনার টিকাকরন শুরু হতেই ভারত বায়োটেকের কো-ভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেন পরীক্ষা সম্পূর্ণ হবার আগেই এই টিকা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রথমেই প্রশ্ন উঠেছিল। সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল টিকার সুরক্ষা নিয়ম নিয়ে। কিন্তু ভারত বায়টিকের তরফে জানানো হয়েছিল টিকার ২০০% সফল পরীক্ষা হয়েছে। টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনা। তবে এবার ভারত বায়োটেক বিস্তারিত একটি তথ্য পত্র বা ফাক্ট শিট সামনে এনেছে। তাতে বলা হয়েছে এই টিকা সকলের শরীরের সহ্য নাও হতে পারে। কারা এই টিকা নিতে পারবেন এবং কারা পারবেন না সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সামনে আনা হয়েছে।
টিকাকরণ শুরুর তৃতীয় দিনে ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক স্বাস্থ্য কর্মী কোভ্যাক্সিন নিতে আপত্তি জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৫৮০ রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে। অসুস্থ হয়েছেন ৭ জন।উত্তর প্রদেশ ও কর্নাটকে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে টিকার কারণে এই মৃত্যু নয়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।
এদিকে ভারত বায়োটেকের ফ্যাক্স শিটে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে তাদের টিকা কারা নিতে পারবেন এবং কদের শরীরে এক্কেবারে উপযোগী হবে না কোভ্যাক্সিন টিকা। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোন রোগের ওষুধ খাচ্ছেন যাদের শরীরে কোনও জটিল বা ক্রনিক রোগ রয়েছে এবং তার চিকিৎসা চলছে, তার জন্য তাকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তারা এই টিকা নিতে পারবেন না। গায়ে জ্বর থাকলে, তাপমাত্রা ওঠা নামা করলে টিকা নেওয়া যাবে না।
যাদের এলার্জির সংক্রমণ রয়েছে তারা কোনো ভাবেই এই টিকা নেবেন না। যেকোনো ধরণের অ্যালার্জি থাকলে বা পরিবারে অ্যালার্জির ইতিহাস থাকলে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যারা অ্যালার্জির কারণে ওষুধ খান তাদের জন্য এই টিকা উপযোগী নয়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে তাদের। যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা যদি কোভ্যাক্সিন নেন তাদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেছে ভারত বায়োটেক। একইসঙ্গে শ্বাসকষ্ট ছাড়াও মুখ ও গলা ফুলে যেতে পারে। সারা শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। এমন কি যখন তখন মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারেন তারা। এছাড়াও সারা শরীরে অসম্ভব যন্ত্রণা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে যাওয়া চুলকানি মাথাব্যথা জ্বর বমি বমি ভাবের মতো পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ব্লিডিং ডিজ অর্ডার থাকলে, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখার ওষুধ খেলে এই টিকা নেওয়া যাবে না। শরীর দুর্বল হলে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কম হলে টিকা না নেওয়াই ভালো। গর্ভবতী মহিলা বা যারা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন তারা একেবারেই টিকা নিতে পারবেন না। আগে অন্য কোনো কোভিড টিকা নেওয়া থাকলে এই টিকা নেওয়া যাবে না।
কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পর টানা তিন মাস প্রাপকদের শরীরে কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর যদি কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাকে সরকারি হাসপাতালে বা সরকার অনুমোদিত হাসপাতালে বা চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা করানোর দায়িত্বভার গ্রহণ করবে সংস্থা। প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ দেবে ভারতবায়োটেক বলে জানানো হয়েছে।