আমাদের ভারত, ২৯ জানুয়ারি:কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের কান্না, আবেগময় বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই সম্পূর্ণ ছবিটাই বদলে যায়। গণতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর মিছিল ঘিরে দিল্লিতে হাঙ্গামার পর কৃষকদের ওপর পুলিশ চাপ বাড়াতে থাকে। কিন্তু আন্দোলন ধরে রাখতে মুজাফফরনগরে কিষান মহা-পঞ্চায়েতের ডাক দেয় ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন। শুক্রবার সেই মহা-পঞ্চায়েতে ভিড় ছিল নজরকাড়া। এই জমায়েতের নেতৃত্বে ছিলেন নরেশ টিকায়েত। তিনি রাকেশ টিকায়েতের ভাই।
শুক্রবার মোজাফফরনগরের মহা পঞ্চায়েতে ঠিক হয়েছে দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে শনিবার থেকে দিল্লি সীমান্তে জড়ো হতে শুরু করবেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নে সদস্যরা। এতে দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের শক্তি অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে আজ ওই সীমান্তগুলিতে গিয়ে বেশ কিছু মানুষ আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে উঠে যাওয়ার হুমকি দেয়। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এলাকার লোকজনের সংঘর্ষের পরেই আসরে নামে শিরোমনি অকালি দল।
চণ্ডীগড়ে শিরোমণি আকালি দলের নেতা বিক্রম সিং তার দলের কর্মীদের কাছে আর্জি জানান দ্রুত সিংঘু ও গাজীপুরে আন্দোলন স্থলে ফিরে যেতে। কারণ সেখানে এখন অকালি দল কর্মীদের অনেক বেশি প্রয়োজন।
বিক্রম সিং বলেন, “আমি জানি দিল্লি সীমান্তে এখনও আপনাদের অনেকেই রয়েছেন। কৃষক আন্দোলন ভেঙে দিতে চাইছে কেন্দ্র। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে হারিয়ানা বিজেপিও। কৃষক আন্দোলন করতে গিয়ে যাদের প্রাণ গেছে তাদেরই আত্মাহুতি যেন বিফলে না যায় তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক আন্দোলনকে সফল করা বা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার মত বড় আর কিছু হতে পারে না।”
ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের পাশে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্রীয় লোক দল। শিরোমনি আকালি দলের নেতার অভিযোগ কৃষক আন্দোলন ভাঙার জন্য অত্যন্ত কাঁচা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। আন্দোলন ভাঙতে লুম্পেনদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতকে টার্গেট করা হয়েছিল। একই জিনিস করা হয়েছে সিংঘু সীমান্তে। সরকার আন্দোলন স্থলের জল-বিদ্যুৎ কেটে দিয়েছে। খাবার সরবরাহে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে আন্দোলন আরো শক্তিশালী হবে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় কেন্দ্র সরকার এক জাতের সঙ্গে অন্য জাতকে লড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
গণতন্ত্র দিবস গোলমালের জন্য কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয়েছে। এর তীব্র বিরোধিতা করেছে শিরোমণি অকালি দল। এদিকে কৃষক নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছে পুলিশের ভয় দেখিয়ে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। স্বরাজ পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, মোদিজীর একটা কথা জেনে রাখা উচিত হার স্বীকার করে কৃষকরা ঘরে ফিরবে না। ট্রাক্টর মিছিলে যে অশান্তি হয়েছে তার জন্য আমরা লজ্জিত। হিংসা যেকোনো আন্দোলনকে ধাক্কা দেয়। এই মুহুর্তে বলতে পারছি না কারা গণতন্ত্র দিবস গোলমাল পাকিয়েছে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে যাদেরকে আন্দোলন থেকে বাইরে রাখতে চেয়েছিলাম তারাই এই কাজ করেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সিংঘু, টিকরি সহ দিল্লির কয়েকটি সীমান্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কৃষকরা। ওইসব এলাকার লোকজন এসে আন্দোলনকারীদের উঠে যেতে বলে। অন্যদিকে পুলিশ গাজিপুর সীমান্ত থেকে আন্দোলনকারীদের উঠে যেতে বলে।