সাগরদিঘির পর সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে উদ্বিগ্ন তৃণমূল নেত্রী, ফুরফুরা শরিফের দায়িত্ব থেকে সরানো হল ফিরহাদকে

আমাদের ভারত, ৭ মার্চ: ফুরফুরা শরিফের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হলো ফিরহাদ হাকিমকে। তার জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে তপন দাশগুপ্তকে। চেয়ারম্যান হয়েই বুধবার ইমামদের সঙ্গে দেখা করবেন তপন দাশগুপ্ত বলে জানাগেছে। চেয়ারম্যান বদলের এই সিদ্ধান্ত খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছে বলেই সূত্রের খবর।

দীর্ঘদিন ধরে এই দায়িত্বে ছিলেন কলকাতা পুরুনিগমের মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। যদিও এই বদলের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছেন নতুন চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই ফিরহাদ তাকে ফোন করেন এবং জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ফুরফুরা শরিফের উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তাকে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংখ্যালঘুদের সমস্যার বিষয় গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরে এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে এলো। তপন দাশগুপ্ত হুগলির বিধায়ক হওয়ায় তাকে ফুরফুরার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানাগেছে। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। সংখ্যালঘু প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে মূলত সওয়াল করেছিলেন ত্বহা সিদ্দিকি। সামনেই ভোট তাই এই সমস্ত বিষয়ে বিবেচনা না করেই প্রার্থী দেওয়া হলে সারা পশ্চিমবাংলায় মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির ঘটনা ঘটতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।

সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাহলে কি সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ অসন্তুষ্ট রাজ্যের শাসক দলের প্রতি।সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ায় সংখ্যালঘুদের সমর্থন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। সোমবার মন্ত্রিসভার আলোচনাতেও এই বিষয়টি উঠে আসে। কোথায় এবং কি অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তা জানতে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সাবিনা ইয়াসমিনদের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে এ বিষয়ে মনে রাখা দরকার নাওশাদের গ্রেফতারিও একটি বড় বিষয়। আইএসএফ বিধায়ক পীরজাদা পরিবারের ছেলে। নওশাদ সিদ্দিকীকে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ৪০ দিনেরও বেশি সময় জেলবন্দি থাকেন তিনি। তার গ্রেফতারিতে বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সাগরদিঘি নির্বাচনেও নাওশাদ যে একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। আর বাংলার রাজনীতিতে ফুরফুরা শরিফের যে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *