
আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ১৩ জুন: বাঘের হামলায় ফের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল সুন্দরবনের জঙ্গলে। নিহতের নাম গোষ্ঠ নাইয়া(৩৮)। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনদফতরের অধীন চিতুরির জঙ্গলে। কুলতলি থানার অন্তর্গত দেউলবাড়ি গ্রাম থেকে তিন সঙ্গীর সাথে শনিবার সকালে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। গোষ্ঠর সঙ্গীরা বাঘের সাথে লড়াই করে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাকে। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরা ছেড়ে বেশ কিছুদিন ইটভাটায় কাজ করেছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দু’মাস ধরে সংসার চালানোর জন্য সঙ্গীদের সাথে সুন্দরবনের জঙ্গলের নদী, খাঁড়িতে মাছ কাঁকড়া ধরতে যাচ্ছিলেন গোষ্ঠ। এদিনও সেভাবেই গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ যে বিপদ মাথার উপরে ছিল, তা তিনি বোঝেননি। সুন্দরবনের মাতলা নদীর শাখা শঙ্কর খালে মাছ ধরার সময় বাঘে আক্রমণ করে গোষ্ঠকে। মাথায় থাবা বসিয়ে জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করলে গোষ্ঠর সঙ্গীরা বাঘের উপর লাঠি সোটা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে লড়াই করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু তড়িঘড়ি উদ্ধার করে নিয়ে এলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পথেই মৃত্যু হয় গোষ্ঠর। মৃতদেহ গ্রামে ফিরলে সেখানে নেমে আসে শোকের ছায়া।
ঘটনার খবর পেয়ে, শনিবার দুপুরে বাঘের হামলায় নিহত গোষ্ঠ নাইয়ার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সাথে দেখা করলেন এলাকার সিপিএম বিধায়ক রামশংকর হালদার ও সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলি। তার পরিবারের হাতে এককালীন কুড়ি হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। প্রতিমাসে তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে একহাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কান্তি বাবু। এছাড়া মৃতের তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচও তারা দেবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি সরকারের কাছে তারা আবেদন করেছেন যে বাঘের হামলায় নিহত এই পরিবারের দায়িত্ব নিক সরকার।
গোষ্ঠর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। পরিবারের বক্তব্য একটানা লকডাউনের জেরে আয় কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো পরিবারের। সেই কারণেই জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন গোষ্ঠ। কিন্তু আর ফেরা হল না।