রবীন্দ্রভারতী কাণ্ডে ক্ষমা চাইতে এসে সিঁথি থানায় গ্রেফতার ৫ বহিরাগত ছাত্রছাত্রী

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ৬ মার্চ: বসন্ত উৎসবে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠে লেখা অশ্লীল শব্দের জন্য প্রবল বিতর্কের মুখোমুখি হয় কিছু ছাত্রছাত্রী। শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমা চাইতে আসে ৫ বহিরাগত পড়ুয়া। আর ক্ষমা চাইতে আসার পরই তাদের গ্রেফতার করে সিঁথি থানার পুলিশ। আপাতত তাদের থানায় বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তারা কাদের সঙ্গে এসেছিল সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

কী উদ্দেশ্যেই বা তারা এমন অসভ্যতামি করলো সেটাও জানতে চাইছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার জন্যই কি এমন অশ্লীল কাজ করেছিল তারা? আপাতত সেটাই খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।

এদিন ক্ষমা চাইতে আসার পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে থেকে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে বাইরে অপেক্ষা করছিল। প্রসঙ্গত, বসন্ত উৎসবের নামে অসভ্যতামির অভিযোগ নিয়ে অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে বসন্ত উৎসবের পালন করতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে চূড়ান্ত অসভ্যতা করেছে পড়ুয়াদের একাংশ। কিছু ছাত্র রং ও লাল আবির দিয়ে বুকে অশ্লীল ভাষায় কিছু শব্দ লেখা রয়েছে। ছাত্রীদের পিঠেও লেখা হয়েছে ভাষায় প্রকাশ করার অযোগ্য ভাষা। যা ভাইরাল হতেই তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

চাপেরে মুখে পড়ে শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্র-ছাত্রী। তাঁরা শ্রীরামপুর ও চন্দননগরের বাসিন্দা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর তাঁদের নিরাপত্তারক্ষীদের ঘরে বসিয়ে রাখা হয়। সেখানে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের সামনেই দোষ কবুল করে ভুল স্বীকার করেন ওই ৫ ছাত্র-ছাত্রী। যদিও অভিযুক্তদের একাংশ ক্ষমা চাইলেও অনেকেই বলছেন, এই ঘটনায় রবীন্দ্র ভাবাদর্শে এবং বাঙালির আত্মসম্মানে যে কলঙ্কের ছিটে লাগল, সেটা বোধহয় কোনদিনই মুছবে না। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।

রবীন্দ্রভারতী কাণ্ডে অভিযুক্ত আরেক ছাত্র
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্ত উৎসব ঘিরে এই ছবি বিতর্ক কাণ্ডে স্পষ্ট হল বহিরাগত যোগ। এই ঘটনায় ক্ষমা চাইতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিল অভিযুক্ত ৫ ছাত্রছাত্রী। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই হুগলির চুঁচুড়া এবং চন্দননগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য পড়ুয়াদের বন্ধু-বান্ধব হওয়ার সুবাদেই তারা এসেছিল বসন্ত উৎসবে। আর তাতেই যত বিপত্তি। সেইসব অনুতপ্ত পড়ুয়াদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া না হয়েও বসন্ত উৎসবে অংশ নেওয়া ভুল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাদের বেশ কিছু ছবি বিকৃতও করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বক্তব্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *