নদী বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত গ্রাম

ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ৮ এপ্রিল: সামনেই পূর্ণিমা। আর সেই পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলের স্রোতে নদী বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হল দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তী ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বুধবার সকালে জোয়ারের সময় বাঁধ ভাঙ্গে ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরদাস পাড়ায়। সেখান থেকে জল ঢুকে চার চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়। ধান খেত থেকে শুরু করে সাধারণ বাড়ি ঘর সবকিছুই প্লাবিত হয়েছে এই বিস্তীর্ণ এলাকার।

একদিকে করোনা আতঙ্কে গৃহবন্দি মানুষজন। অন্যদিকে সেই ঘরেই জল ঢুকে যাওয়ায় ঘর থেকে বেরিয়ে উঁচু জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষজন। কি খাবেন, কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। অনেকে ঘর থেকে সব কিছু জিনিষপত্র বের করতে পারেননি। লকডাউনে কাজ না থাকায় এমনিতেই সমস্যায় ছিলেন এই এলাকার মানুষজন। তার উপর এই বাঁধ ভেঙ্গে গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় অনেকের ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে। ধান জমিতে নোনা জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে। পুকুর প্লাবিত হয়ে মাছ নষ্ট হয়েছে। কিভাবে যে এখন দিন কাটবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না এই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় শতাধিক পরিবার। এলাকার মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে বাঁধের দূরাবস্থার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু বাঁধ মেরামতির কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তৈরি হয়নি কংক্রিটের বাঁধ। ফলে আরও একবার নদীর নোনা জল ঢুকে প্লাবিত হল গ্রাম।

যদিও বাঁধ ভাঙ্গার খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিক, সেচ দফতরের আধিকারিকরা গ্রামে আসেন। সেখানে গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষজন তাদেরকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের মুখে পড়ে আধিকারিকরা বাঁধ মেরামতি শুরু করেন। গ্রামের কিছু মানুষও বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগান। দ্রুত বাঁধ মেরামতি করা হয়।

এ বিষয়ে বাসন্তীর সেচ দফতরের আধিকারিক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই বাঁধটি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এটি ভাঙ্গনের মুখ হওয়ার কারণে সমস্যা হচ্ছে। আমরা দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ করছি। যাতে নতুন করে এই বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামে জল না ঢোকে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে”।

এলাকার মানুষজন দাবি করেন, “কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ না হলে এই এলাকার নদী বাঁধ টিকবে না। মাটি দিয়ে বাঁধ বাঁধলে আবার ভাঙ্গবে”।