খাদ্য সুরক্ষা দিবসে দুর্গাপুরে খাদ্য সুরক্ষা দফতরের অভিযান 

জয় লাহা, আমাদের ভারত, দুর্গাপুর, ৭ জুন: দুধ থেকে হলুদ, তেল থেকে পোস্ত। এমনকি খাদ্য সুরক্ষা আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে খোলা বাজারে অবাধে বিকোচ্ছে রসনা তৃপ্তির ভেজাল খাবার। যার বেশিরভাগই খাদ্য সুরক্ষা রেজিষ্ট্রেশন নেই। আর ওইসব খাবার খেয়ে মানব শরীরে অচিরেই ঢুকছে নানান রোগ জীবানুর ধারক। ভেজাল খাবার রুখতে সচেতনতার লক্ষ্যে জোর তৎপরতা শুরু করল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা দফতর। বুধবার খাদ্য সুরক্ষা দিবসে বিভিন্ন খাবারের উৎপাদক দোকান, সংস্থা ও বিক্রেতার খাবারের গুণগত মান খতিয়ে দেখতে অভিযান চালালো খাদ্য সুরক্ষা দফতর। একই সঙ্গে খাদ্য সুরক্ষার রেজিষ্ট্রশনের লক্ষ্যে সচেতনতার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান শিবির করল পশ্চিম বর্ধমান খাদ্য সুরক্ষা দফতর। 

প্রসঙ্গত, বুধবার ছিল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা দিবস। আর এইদিন সাধারণ মানুষের খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে দুর্গাপুর ও কাঁকসায় অভিযান চালালো খাদ্য সুরক্ষা দফতর। এদিন ভ্রামমান যান নিয়ে দফতরের আধিকারিকরা দুর্গাপুর, বিধাননগর, চন্ডীদাস, কোর্ট মোড় এলাকায় বিভিন্ন রেঁস্তোরায়, হোটেলে মিষ্টির দোকানে অভিযান চালায়। একই সঙ্গে নানান খাদ্য উৎপাদক দোকান ও বিক্রেতার রেজিষ্ট্রশন নেওয়ার প্রচার অভিযান করা হয়। সেই মত এলাকার দোকানদার বা সংস্থা তাদের প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে আবেদন পত্র জমা দেয়। প্রশ্ন, কেন এই রেজিষ্ট্রেশন জরুরি? ২০০৬ সালের ফুড সেফটি আইনের ৩১ নং ধারা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদক দোকান, সংস্থা ও বিক্রেতা যাদের বছরে ১২ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়। তাদের ফুড সেফটি রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। রেজিষ্ট্রশন না থাকলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও ৬ মাস হাজতবাস হতে পারে। সাম্প্রতিকালে, আসানসোল-রানীগঞ্জ, দুর্গাপুরে নানান নামিদামী খাবারের নকল খাবার বাজারে বিকোচ্ছে। এছাড়াও, মধু, গুড়ের মত খাবারে চিনি মিশ্রন সহ ভেজালের অভিযোগ উঠেছে। জেলা ফুড সেফটি দফতর সুত্রে জানা গেছে, খাদ্য সুরক্ষা লাইসেন্সের জন্য, পাসপোর্ট ছবি, আধারকার্ড, ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে। ফুড লাইসেন্স না থাকলে হাইজিন রেটিং লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবে না।

পশ্চিম বর্ধমান খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক কিরণমণি দেবনাথ জানান, “চা দোকান থেকে মিষ্টির দোকান যে কোনো খাবারের ব্যাবসা করলে ফুড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক।

এদিন বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয় হাইজিঙ্ক রেটিংয়ের ওপর। তাতে ফাইভ স্টার রেটিং উঠলে, আগামী দু’বছর ওই রেঁস্তোরায় খাবারের নিরিক্ষন করা হবে না। এদিন প্রায় ৬-৭টি দোকানে অভিযান চালানো হয়।”

জানাগেছে, গত অর্থ বছরে লাইসেন্স ইস্যু হয়েছে
১৩৮৯টি। দুর্গাপুর ও কাঁকসায় রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে ৬২০টি। চলতি অর্থ বছরে গত ২৩ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ২০৬টি লাইসেন্স ইস্যু হয়েছে। দুর্গাপুর ও কাঁকসায়
১৩৬টি রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। এদিন কিরণমণিবাবু আরও বলেন, “বাজারে নিয়মিত নজরদারির পাশাপাশি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য প্রায়ই শিবির করা হয়।”  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *