আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৩ মে: অন্যান্য বছরের মত এবারেও দোল উৎসব উপলক্ষ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের রাধামাধব জিউ’য়ের আশ্রম থেকে চল্লিশ জন তীর্থযাত্রী বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন একটি আশ্রমের আমন্ত্রণে। ফেরার কথা ছিল গত ২৩ মার্চ। লকডাউনের কবলে পড়ে সেই থেকে এই দলটি বৃন্দাবনেই আটকে আছেন। তীর্থযাত্রী সবারই বয়স প্রায় ষাটের ওপরে।
আজ এক ভিডিও কলের মাধ্যমে এক তীর্থ যাত্রী ভীম চন্দ্র দাস জানান, আশ্রমের প্রাচীর বেষ্টিত ঘেরাটোপের মধ্যে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও দলের প্রায় সবাই মনের দিক থেকে ভেঙে পড়েছেন। দীর্ঘ দিন বাড়ির বাইরে থাকায় বাড়ির অন্যদের চিন্তায় কয়েকজন খাওয়া-ঘুম ত্যাগ করে মানসিক অবসাদে বিধ্বস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। মোবাইলে ভিডিও’র মাধ্যমে ওনারা পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন, যে কোনও ভাবে যাতে তাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়। ফেরার পর করোনাভাইরাস জনিত যে কোনো শারীরিক পরীক্ষা বা যা কিছু নিয়মবিধি সবটাই তারা পালন করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে কোলাঘাটে আশ্রমে এবং আটকে পড়া বাড়ির লোকেদেরও দিন দিন উৎকণ্ঠা বাড়ছে। কোলাঘাটের রাধামাধব আশ্রমের পক্ষে কল্যাণ সামন্ত জানিয়েছেন, আটকে পড়া মানুষগুলো যেমন ষাটের অধিক বয়স আবার দীর্ঘ দিন বাড়ির বাইরে আটকে থাকাটাও ওনাদের ক্ষেত্রে খুবই কষ্টের। বাড়ির লোকজন আশ্রমে এসে রোজই কান্নাকাটি করছেন। কোলাঘাটের আশ্রম থেকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি, প্রতিকারের কোনো দিশা দেখছেন না তারা। রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছেন বিষয়টিতে নজর দেওয়ার জন্য। সবমিলিয়ে সারাবছর সাধন ভজন, নানাবিধ সামাজিক ও সেবামূলক কাজে মুখরিত কোলাঘাটের রাধামাধব জিউ’য়ের আশ্রমে যেন শোকের ছায়া। একে লকডাউন তার উপর এই ঘটনায় দুঃশ্চিন্তার ছায়া গ্রাস করেছে আশ্রম ও পরিবারগুলিকে।