‘গঙ্গা বিলাস’ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও রঙিন করবে, আশা বাংলাদেশের মন্ত্রীর

আমাদের ভারত, বাংলাদেশ, ৪ ফেব্রুয়ারি: “বাংলাদেশ- ভারতের সম্পর্ক মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রক্ত দিয়ে তৈরি। ৫০ বছর ধরে এ সম্পর্ক বিদ‍্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে এ সম্পর্ক অন‍্যরকম উচ্চতায় চলে গেছে।” শনিবার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি এ কথা বলেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন। করোনা মহামরীর সময়েও তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশ ভারতের মধ‍্যে ব‍্যবসা-বাণিজ‍্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। গঙ্গা বিলাসের এ সফরের মধ‍্য দিয়ে তা পশ্চিমা দেশে পৌঁছে গেছে। তাদের মাধ‍্যমে সমগ্র পৃথিবীতে চলে গেছে। সর্বক্ষেত্রে অন‍্যরকম উচ্চতায় উঠেছে।

গঙ্গা বিলাস জাহাজটি যখন বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে তখন বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে দিয়ে আরো রঙিন করে দিয়ে যাবে। প্রতিমন্ত্রী আজ মোংলা বন্দরে ভারতীয় ক্রুজ ভেসেল ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ এর আগমন উপলক্ষ্যে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, সুইজারল‍্যান্ডের পর্যটক হ‍্যান্স কাফম‍্যান প্রমুখ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

এই তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, “ভারতের পর্যটকবাহী নৌযান ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’ শুক্রবার বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে। ‘গঙ্গা বিলাস’ এর পর্যটকদের বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আংটিহারায় অনবোর্ড ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করবে।

‘এমভি গঙ্গা বিলাস‘ বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বিক সহযোগিতা করবে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ি প্রটোকল রুটের নাব্যতা রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌপথ ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রদান এবং সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকবে বিআইডব্লিউটিএ।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম খান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আংটিহারায় অনবোর্ড কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা করেছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং এনবিআর। চিলমারীতে কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং এনবিআর। বাংলাদেশের নৌপথ অতিক্রমকালে জাহাজটিকে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করার পদক্ষেপ নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এন্ট্রি পয়েন্ট আংটিহারাতে যাত্রী এবং নাবিকদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নৌযানটির পরিচালনাকালে সার্বক্ষণিক তদারকি করবে জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি ‘মেসার্স গালফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ’; দর্শনীয় স্থানসমূহ দেখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন করবে ট্যুর অপারেটর কোম্পানি ‘জার্নিপ্লাস’।

উল্লেখ্য, বিলাসবহুল ‘গঙ্গা বিলাস’ ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে ১৩ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করেছে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি ‘গঙ্গা বিলাস’ এর যাত্রা উদ্বোধন করেন।

১৯৭২ সালের প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) এর অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল, যা এখনও কার্যকর আছে। প্রটোকলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাশে-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সমঝোতা স্মারকের আলোকে ২০১৮ সিলে এসওপি স্বাক্ষরিত হয়। এসওপি’র আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর হতে তিনটি ভারতীয় এবং একটি বাংলাদেশী নৌযান চলাচল করেছে।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here