কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে শেষ করে দিল জেনারেটর ব্যবসায়ীকে, অবৈধ সম্পর্ক জেনে ফেলাতেই এই পরিণতি

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৭ ফেব্রুয়ারি: ফাঁকা মাঠ থেকে জেনারেটর ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য। সোমবার সাতসকালে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় পতিরাম থানার কামালপুর এলাকায়। কুড়ুল দিয়ে কুপিয়েই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। এক ব্যক্তির অবৈধ সম্পর্ক জেনে ফেলাতেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই জেনারেটর ব্যবসায়ীর নাম প্রবীর দত্ত(৬২) ওরফে গণেশ। বাড়ি বালুরঘাট শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অগ্নিশিখা ক্লাব পাড়া এলাকায়। মৃতের শরীরে একাধিক ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। সেই জায়গা থেকে পরিবারের লোকেরা খুনের অভিযোগ তুলেছেন। এদিন সকালে এমন ঘটনার খবর পেয়েই তড়িঘড়ি এলাকায় পৌছায় পতিরাম থানার ওসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী। পরে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে।

এই ঘটনায় কাশীনাথ পাহান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পতিরাম থানার পুলিশ। তবে কি কারণে ওই জেনারেটর ব্যবসায়ীকে রাতের অন্ধকারে খুন হতে হল তা নিয়ে জোর তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

জানা গেছে, বালুরঘাট শহরের অগ্নিশিখা ক্লাব পাড়া এলাকার বাসিন্দা তথা জেনারেটর ব্যবসায়ী প্রবীর দত্ত হাটের বিভিন্ন দোকানে ইলেকট্রিক সংযোগের কাজ করতেন। আর যে কারণে অধিকাংশ সময় তাকে বাড়ির বাইরেই থাকতে হত। রবিবার রাতে পতিরাম থানার কামালপুর হাট সংলগ্ন এলাকাতেই ছিলেন তিনি। রাতে স্ত্রী মিনু দত্তের সাথে টেলিফোনে কথাও বলেছিলেন তিনি। আর এরপরেই এদিন সাতসকালে ফাঁকা মাঠ থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আঁতকে ওঠেন পরিবারের লোকেরা। মৃতর শরীরে একাধিক জায়গায় ক্ষতর চিহ্ন দেখে খুনের অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশেরও অনুমান ধারালো অস্ত্র দিয়েই কুপিয়ে খুন করা হয়েছে ওই জেনারেটর ব্যবসায়ীকে। তবে কী কারণে এই খুন তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পতিরাম থানার পুলিশ। স্থানীয় সুত্রের খবর অনুযায়ী হাটের দোকানগুলোতে ইলেকট্রিক সংযোগ দেবার কারনে অধিকাংশ দিনই কামালপুর এলাকাতেই রাত্রি কাটাতেন মৃত জেনারেটর ব্যবসায়ী। গতকাল রাতেও স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়িতে শুয়ে ছিলেন তিনি। যে বাড়ির এক মহিলার সাথেই অবৈধ সম্পর্ক ছিল ঘটনার মূল অভিযুক্ত কাশীনাথ পাহানের। রাতের অন্ধকারে ওই মহিলার বাড়িতে কেন আশ্রয় নিয়েছেন তিনি? এ প্রশ্ন তুলেই জেনারেটর ব্যবসায়ীর সাথে তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়ায় কাশীনাথ বলে অভিযোগ। চলে মারপিটের ঘটনাও। এরপরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে জেনারেটর ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে খুন করে কাশীনাথ বলে অভিযোগ।

আজ সকালে ফাঁকা মাঠ থেকে ওই ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হতেই তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার পরেই মুল অভিযুক্ত কাশীনাথ পাহানকে গ্রেফতার করে পতিরাম থানার পুলিশ।

মৃত জেনারেটর ব্যবসায়ীর স্ত্রী মিনু দত্ত বলেন, হাটেঘাটে ইলেকট্রিক সংযোগ দেবার কাজ করত তার স্বামী। যে কারণে রাতে অধিকাংশ দিনই বাড়ির বাইরে থাকত সে। রাতে ফোনে কথাও হয়েছিল স্বামীর সাথে। এদিন এমন ঘটনা ঘটবে তা তারা বুঝতেও পারেননি।

এলাকার কাউন্সিলর কুন্তল দাস বলেন, অত্যন্ত সাধারণ লোক ছিল সে। ইলেকট্রিকের কাজ করেই দিনযাপন করত। তাকে যে এমন নৃশংস ভাবে খুন হতে হবে তা তারা ভাবতেও পারছেন না। ঘটনা জানিয়ে তারা থানায় একটা অভিযোগ জানাবেন।

পতিরাম থানার ওসি জানিয়েছেন, মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *