বিশ্বভারতীর হলকর্ষণ উৎসবে প্রণববাবুর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ রাজ্যপালের

আশিস মণ্ডল, শান্তিনিকেতন, ১২ আগস্ট: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বুধবার বিশ্বভারতীর শ্রীনিকেতনে হলকর্ষণ উৎসবে যোগ দিতে সস্ত্রীক শান্তিনিকেতনে পৌঁছে প্রণববাবুকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গ্রামীণ মানুষের জীবনচর্চা ও কৃষির উন্নতিতে শান্তিনিকেতনের অদূরে ১৯২২ সালে রবীন্দ্রনাথ স্থাপন করেন শ্রীনিকেতন। সুরুলের কুঠিবাড়িকে ঘিরে শুরু হল গ্রামোন্নয়নের কাজ। পুত্র রথীন্দ্রনাথকে বিলেতে পাঠান বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে উন্নত প্রযুক্তির কৃষিকাজের পাঠ নিতে। সেই সঙ্গে শুরু হল কৃষিকাজে উৎসাহ দেওয়ার কাজ। ‘ফিরে চল মাটির টানে…’— যেন কৃষককে তার সেই মাটির টানের কথা মনে করিয়ে দেয়। কৃষিকাজে উৎসাহ দিতে রবীন্দ্রনাথ ১৯২৮ সালে শ্রীনিকেতনে শুরু করলেন হলকর্ষণ উৎসবের। সেদিন কবি নিজে হাল চালনা করেছিলেন, মন্ত্রোচ্চারণ করেছিলেন ক্ষিতিমোহন সেন। সেই দিনটিকে স্মরণ করে আজও চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী হলকর্ষণ উৎসব পালন করে আসছে শ্রীনিকেতন। আগে বর্ষার সময় যে কোনও দিন হলেও রবীন্দ্র তিরোধানের পর প্রতি বছর ২৩ শ্রাবণ শ্রীনিকেতনে এই হলকর্ষণ উৎসব পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এদিন সকাল ৯টা নাগাদ শ্রীনিকেতন পল্লী শিক্ষা ভবন মাঠে তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণ করে। হেলিপ্যাড মাঠে রাজ্যপাল তথা বিশ্বভারতীর প্রধানকে স্বাগত জানান বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

পল্লী শিক্ষা ভবন মাঠ থেকে সড়ক পথে রাজ্যপাল চলে আসেন শ্রীনিকেতন মেলার মাঠে।সেখানেই রাজ্যপাল শ্রীনিকেতনে ৯২ তম হলকর্ষণ উৎসবে যোগদান প্রথা অনুসারে এই হলকর্ষণ উৎসবে হাল চালনা করেন একজন কৃতি কৃষক। তবে উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই সামাজিক দূরত্ব ও বিধি নিষেধ মেনে হলকর্ষণ উৎসব উদযাপন হয়। হলকর্ষণ উৎসবকে ঘিরে রবীন্দ্র ভবনে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বিশ্বভারতী। রবীন্দ্রনাথের সময়কালের কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি দিয়ে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন রাজ্যপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *