
আমাদের ভারত, ৭ ফেব্রুয়ারি: সোমবার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি লিট প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ডি লিট তুলে দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ওই অনুষ্ঠানে অটল বিহারী বাজপেয়ী, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, উইনস্টন চার্চিল, এপিজে আব্দুল কালামের মতো ব্যক্তিত্বদের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক বন্ধনীতে রেখে প্রশংসা করেন আনন্দ। রাজ্যপালের এই ভাবে মমতা স্তুতিকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, সবে হাতেখড়ি হয়েছে রাজ্যপালে, বাংলা শিখতে সময় লাগবে। ধীরে ধীরে সব বুঝবেন। সব থেকে বড় বাংলা শিখে উনি মুখ্যমন্ত্রী এপাং ওপাং ঝপাং কবিতা পড়ার সুযোগ পাবেন। টুইটারে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্যপাল যেহেতু সবে বাংলা শিখতে শুরু করেছেন, সবে তার বাংলায় হাতেখড়ি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাকে জানতে তার সময় লাগবে। এখন সরকারের মন্ত্রী ও অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে তিনি যে ফিডব্যাক পাচ্ছেন, সেই অনুযায়ী তিনি বলছেন। এরপর যখন সময় যাবে আস্তে আস্তে তিনি জানতে পারবেন তার নলেজ বাড়বে। এরপর তিনি বাংলা পত্রপত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার মানুষ কি বলছেন সবটাই জানতে পারবেন। এরপরই তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “সব থেকে বড় কথা রাজ্যপাল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর লেখা কবিতা পড়তে পারবেন এপাং ওপাং ঝপাং।”
অন্যদিকে টুইটারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, “রাজ্যপালের ভাষণ শুনে মনে হচ্ছিল যেন উনি রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে যে ঔপোচারিক বক্তৃতা দেবেন তারই মহড়া দিলেন।”
রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের ফটোকপি মেশিন বলে অভিহিত করেছেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত।
প্রসঙ্গত, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আনন্দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সৌজন্যে কোনো খামতি রাখেননি। নতুন রাজ্য পালের শপথ গ্রহণের দিন কলকাতার একটি বিখ্যাত দোকানের একশোটি রসগোল্লা দুটি নীল হাঁড়িতে করে পাঠিয়েছিলেন আনন্দকে। রাজ্যপাল খুব ভালো ও ভদ্র বলে মন্তব্য করেছিলেন মমতার। এরপর ২৬ শে জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন
রাজভবনে হাতেখড়ি অনুষ্ঠানে দেখা যায় রাজ্যপালের মুখ্যমন্ত্রীকে। যে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি শুভেন্দু, সুকান্ত। অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন শুভেন্দু।
এরপর সেন্ট জেভিয়ার্সের অনুষ্ঠানে মমতার প্রশংসা করে আনন্দ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এই ডি লিট সম্মান অর্জন করেছেন। যে সকল রাজনীতিবিদ রাজনীতির সঙ্গে সাহিত্যের অনন্য স্বাক্ষর রেখেছেন তার মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। সেক্ষেত্রে অটল বিহারী বাজপেয়ী, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, উইনস্টন চার্চিল, এপিজে আব্দুল কালামের মতো ব্যক্তিত্বদের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক বন্ধনীতে রাখেন তিনি। আর রাজ্যপালের এই মন্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু। তিনি লিখেছেন “মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে রাজ্যপালের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আংশিকভাবে হলেও সমর্থন করছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উইনস্টান চার্চিলের মতই। যিনি ১৯৪২ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষের জন্য দায়ী ছিলেন। ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য গণহত্যা। অনাহার অপুষ্টির কারণে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।”