গড়িয়া শ্মশান কাণ্ডে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বললেন রাজ্যপাল! খোঁচা দিলেন মহুয়াকেও

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৩ জুন: ঘরে বসেই রাজ্যের একাধিক দুর্নীতির খবর তার কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। আর রাজ্যের প্রশাসনিক গাফিলতি থাকলে বরাবরই স্টেপ আউট ব্যাটিং করেন তিনি। এবার এবার গড়িয়া মহাশ্মশানের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে ফের সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। শনিবার ট্যুইট করে এই কাণ্ডের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানালেন তিনি। রাজ্যপালের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1271709814570139648?s=19

বুধবার সকালে গড়িয়া শ্মশানে একসঙ্গে ১৪ টি মৃতদেহ এনেও স্থানীয় বাধায় ফিরে যান পুরকর্মীরা। কিন্তু তার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই লাশগুলিকে হুক দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ভাইরাল হয়ে যায়। এদিন ওই ঘটনা সম্পর্কে কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনারের সঙ্গে ২ ঘণ্টা আলোচনার পর তিনটি টুইট করেন রাজ্যপাল। প্রথম টুইটে তিনি উল্লেখ করেন, হাসপাতাল থেকে ওই ১৪ টি দেহ শ্মশানে আনা পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য পুর কমিশনার তাঁকে দিয়েছেন। যাঁরা এই অমানবিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেছেন।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1271711758625828866?s=19

তারপর দ্বিতীয় টুইটেই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল। তিনি লিখেছেন, ‘যেভাবে মৃতদেহ, গুলি টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা বর্বরোচিত, অশোভনীয়। এমন ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ এদিন তিনি ফিরহাদ হাকিমকেও তোপ দাগেন। কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিমকেও ডেকেছিলেন রাজ্যপাল, কিন্তু মেয়র আসেন নি। এ নিয়ে রাজ্যপালের খোঁচা, পুরসভার চেয়ারপার্সন অমনোযোগী। তাঁর দেখা করার কথা ছিল, তিনি ভুলে গিয়েছেন।পুরকমিশনারের মাধ্যমে তাঁকে দেখা করার অনুরোধও জানিয়েছেন।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1271713754456023041?s=19

তৃতীয় টুইটে কলকাতার প্রশাসক তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তোপ দাগেন রাজ্যপাল। তার দাবি, ফিরহাদ হাকিম তাঁকে ভুলে গিয়েছেন। পুর কমিশনারের মাধ্যমে ফিরহাদ হাকিমকে দেখা করার অনুরোধও জানিয়েছেন ধনকড়। এদিন গড়িয়া কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর সঙ্গেও টুইট যুদ্ধে জড়িয়েছেন তিনি। মহুয়া গড়িয়ার ঘটনা নিয়ে টুইটে লেখেন, ‘রাজ্য সরকার যখন কোভিড পরিস্থিতি, আমফান ও পরিযায়ী সমস্যার মোকাবিলা করছেন, রাজ্যপাল তখন পিছন থেকে বিজেপির দেওয়া তির ছুঁড়ছেন। পচা আপেল গাছ থেকে বেশি দূরে পড়ে না।’ এর পাল্টা টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘পঞ্চায়েতের দুর্নীতি সামনে এনে এখন বেকায়দায় পড়েছেন। আপাদমস্তক চুরি, দূর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েতের চুরি সবার নজরে এনে এবার এমবির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অনুগ্রহ পেতে চাইছেন। রাজ্যপালকে আক্রমণ কি সেই জন্য? তবে এমন অসহায় অবস্থায় আপনি একা নন, আপনার মতো যোগ্য নেতানেত্রীদের বন্দিদশা থেকে অবাক হই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *