শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করবেন না বার্তা দিলেন রাজ্যপাল

আমাদের ভারত, বর্ধমান, ১৫ নভেম্বর: রাজ্যপালের হেলিকপ্টার পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। রাজভবনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও হেলিকপ্টার না পাওয়া নিয়ে রাজ্যপালের উষ্মার কথা জানানো হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন ‘হেলিকপ্টারের খরচ তো রাজ্যের মানুষ বহন করে।তাদের জানাতে হবে কি কারণে তার হেলিকপ্টার প্রয়োজন।’

শুক্রবার বর্ধমানে এসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার বার্তা দিলেন,’এই রাজ্যপাল টুরিস্ট নয়’। পরিষ্কার ভাষায় তিনি বলেন, ফারাক্কা তো সড়ক পথে ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা।যাতায়তের মোট পথ ৬০০ কিলোমিটার। প্রয়োজনে রাজ্যপাল সড়কপথে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেকটি পক্ষকেই নিজের কাজ করে যাওয়া উচিত। নিজের মতকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রতিপন্ন করে অন্যের মতকে প্রকাশ করতে না দেওয়া ঠিক নয়। কখনোই আজ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এমন কোন পত্র দেননি যে রাজ্যপাল তার অধিকারের সীমানা লংঘন করেছেন।’ যদি এমন কোন পত্র আসে তবে অবশ্যই আমি চিন্তা করবো’

শুক্রবার তিনি সড়কপথে ফারাক্কা যাচ্ছেন। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন;তিনি হেলিকপ্টারে যেতে পারছেন না তাতে তার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। প্রয়োজনে তিনি ১০০০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু প্রশাসনিক অসুবিধার কথা বলে হেলিকপ্টার পাচ্ছেন না তিনি। তাই তাকে সড়কপথে যেতে হচ্ছে। হেলিকপ্টার নিয়ে কথাবার্তা বুলবুল আসার আগেই হয়েছিল। অন্যদিকে তিনি জানান, তিনি হঠাৎ সিঙ্গুরে যাননি। তিনি বুঝতে চেয়েছিলেন এত আলোচনা কেন? জেলাশাসককে জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, সমস্যাটা হচ্ছে কোনও কিছু গোপন করতে গেলে মানুষের কৌতুহল সে ব্যাপারে আরো বেশি বেড়ে যায়। হঠাৎ কোথাও গেলে সেখানকার সম্যক অবস্থাটা জানা যায়। যেমন হাসপাতাল। আজ তিনি এমন কোনও চকিত পরিদর্শনে যাবেন কী না তা বলতে চাননি রাজ্যপাল। তিনি বলেন, হঠাৎ কোথাও যাওয়া আগে থেকে ঘোষণা করা উচিত নয়।

এ দিন রাজ্যপাল আরও নানা বিষয়ে মতপ্রকাশ করেন। তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়ে। তিনি বলেন, ১৯তারিখ তিনি আবার আসছেন। সেদিন তিনি অবশ্যই ছাত্রদের সাথে কথা বলবেন। প্রসঙ্গত দুদিন আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রিগিং নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যপাল। বলেছিলেন কোর্ট সভায় এ নিয়ে তিনি অবহিত হবেন। রাজ্যপাল বলেন, যাদবপুর সহ যেখানেই তিনি গেছেন বাম-ডান সব ছাত্রদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

এদিন রাজ্যপাল শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন করেন। তিনি বলেন অধ্যাপকরা আন্দোলনে নামবেন কেন? অথবা রাস্তায়ই বা থাকবেন কেন? তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে? পুলিশের সাথে সংঘাতে হবে; এটা শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে সঠিক নয়। তিনি বলেন ছাত্ররা যাতে বিক্ষুব্ধ না হয় তা দেখতে হবে। সংঘাতের পরিবেশ বাঞ্ছনীয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এখানে রাজ্যপাল, রাজ্য সরকার প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারের সীমানায় প্রত্যেকের থাকা উচিত। আচার্য হিসেবে তার কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেটা তিনি শিক্ষাহিতে প্রয়োগ করতে চান। রাজ্য আড়াই বছর ধরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় যে ভোট হচ্ছে না তাতেও উষ্মা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ভোট অবশ্যই হওয়া উচিত। ভোট না হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।

15 thoughts on “শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করবেন না বার্তা দিলেন রাজ্যপাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *