আমার মিঞাদের ভোটের প্রয়োজন নেই, ঘোষণা হিমন্ত বিশ্বশর্মার

আমাদের ভারত, ১২ অক্টোবর: নিজের তীক্ষ্ণ বক্তব্যের জন্য সবসময়ই বহুলচর্চিত থাকেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এবারেও একটি জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমের মঞ্চ থেকে স্বদর্পে তাঁর ঘোষণা, তিনি ঠিক করেই নিয়েছেন, যে তার মুসলিম ভোটের প্রয়োজন নেই। ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ২০২১ এর মঞ্চে বসে সরাসরি বললেন, মুসলিম সমাজের ভোট তিনি চান না।

তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁর মুসলিম ভোটের প্রয়োজন নেই এর অর্থ এটা নয় যে তিনি মুসলিমদের জন্য কাজ করবেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছর আমি মুসলিমদের বন্ধু হয়ে থাকবো এবং তাদের উন্নয়নের স্বার্থে কাজও করব। কিন্তু আমার মিঞাদের ভোটের প্রয়োজন নেই।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এনআরসি, গোমাংস খাওয়া, জবরদখল উচ্ছেদ, অনুপ্রবেশকারী ইত্যাদির যথেষ্ট সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে একেবারে সরাসরি জবাব দেন। তিনি বলেন, ৭৭ হাজার একর জমি মাত্র ১ হাজার মানুষ দখল করে রেখেছে, অসম সরকার কখনো এটাকে মেনে নেবে না, এটা রাজ্যের ভূমি আইন সম্মত নয়। একই সঙ্গে অনুপ্রবেশকারী মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে তিনি বলেন, “রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ এটা বিশ্বাস করে যে এই অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের জন্যেই প্রাচীন ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আজ সংকটে, জমি জবরদখলের মতো সমস্যার মূলেও এদেরকেই দায়ী করেন তাঁরা।”

অসমের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগের সুরে বলেন, অসমের মুসলিম সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ হচ্ছে কিন্তু ফলাও করে আলোচনা হচ্ছে জবরদখল অভিযান নিয়ে। তাঁর কথায়, মুসলিমদের সঙ্গে আমাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমরা জানি মিঞারা আমাদের জন্য কোনও দিন ভোট দেবেন না। আমিও ওদের ভোট চাই না। আগামী পাঁচ বছর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে উভয়ের মধ্যে। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৪.৫ লাখ মুসলিম পরিবারের হাতে ঘর তৈরি করে তুলে দিচ্ছে তাঁর সরকার। এছাড়াও লাগাতার তাদের উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে।

এর প্রেক্ষিতে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাহলে আপনি কেন মিঞাদের ভোট চাইছেন না? তার উত্তরে তিনি বলেন, “আমি একটা ডিল করেছি। আমরা ওদের জন্য কাজ করব। কিন্তু ভোট চেয়ে ওদের বিরক্ত করব না। ওদের ভোট আমাদের চাই না। কারণ আমি জানি, ওরা কখনোই আমাদের ভোট দেবে না। বেকার বেকার দু’পক্ষের সময় কেন নষ্ট করব? ফলে কোনো সাম্প্রদায়িক সমস্যার সৃষ্টি হবে না।”

তিনি জানান, তিনি ভোটের সময়, প্রচার অভিযানে মুসলিমদের এলাকায় যাননি। ওনারাও তার এলাকায় আসেননি। সেই জন্য নির্বাচনের সময় কোনওরকম হিংসাও হয়নি। নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *