‘বাংলার সরকারকে কলুষিত করছেন’, রাজ্যপালকে ট্যুইটেই পালটা জবাব স্বরাষ্ট্র দফতরের

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৩ জুন: সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গড়িয়া মহাশ্মশানের ভাইরাল ভিডিওকে এবার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলায় পাল্টা ট্যুইটেই তার জবাব দিল রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করার পাশাপাশি রাজ্যপাল ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকারকে কলুষিত করছেন, এমন অভিযোগও করল রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। সব মিলিয়ে জমে গেল রাজ্য বনাম রাজ্যপালের ট্যুইট যুদ্ধ।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকালে এনআরএস হাসপাতাল থেকে ১৪টি দেহ দাহ করার জন্য গড়িয়া শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে স্থানীয় এলাকায় দেহগুলি করোনায় মৃতদেহ বলে গুজব রটে যায়। তাই এভাবে গণ সৎকার করতে বাধা দেন স্থানীয় মানুষজন। বাধ্য হয়ে দেহগুলিকে ফের গাড়িতে উঠিয়ে ফেরত নিয়ে যেতে বাধ্য হন পুরকর্মীরা। কিন্তু এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ছোট্ট ক্লিপিংসে দেখা যায় একটি প্রায় পচাগলা দেহ লোহার রড দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ঘন্টা কয়েকের মধ্যেই পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর একযোগে সাফাই দেয়, ওই দেহগুলি করোনা রোগীর নয়। তা সত্ত্বেও এই ভিডিও সম্পর্কে শনিবার পুর-কমিশনারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। প্রায় ২ ঘণ্টা আলোচনার পর মোট তিনটি টুইট করেন তিনি। সেখানেই সমস্ত ঘটনার তথ্য পেয়েও বিষয়টিকে অশোভনীয় ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন রাজ্যপাল।

এরপরই কড়া ভাষায় রাজ্যপালের টুইটের পালটা জবাব পর পর ৫ টি ট্যুইট করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। ওই ১৪টি দেহ যে কোনও করোনা রোগীর নয়, তা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র দফতর জানায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৃতদেহের মর্যাদা করতে জানে। তাই করোনায় মৃতদের দেহও দেখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাই, কোভিডের ক্ষেত্রেও তথ্য সংক্রাম্ত স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। কোভিডে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়েরা যাতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন তার ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য।

গড়িয়ার দেহগুলির সঙ্গে করোনার কোনও যোগ নেই। দুর্ঘটনায় মৃত কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মর্গে পড়ে থাকা পচন ধরা দেহ সৎকারের দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি সংস্থাকে। ওই সংস্থার অব্যবস্থা এবং গাফিলতির সঙ্গে বর্তমান অতিমারির কোনও যোগ নেই, বলে লেখা হয়েছে টুইটে। তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে ওই সংস্থাকে শো কজ করা হয়েছে।

বারবার সেকথা জানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও সরকারকে কলুষিত করতে বারবার টুইট করছেন রাজ্যপাল। তাতে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এতে রাজ্যকে সুস্থতার পথে নিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবলও ধাক্কা খাচ্ছে। রাজ্য সরকার এই মিথ্যা ভাষণকে নিন্দা করছে।’ রাজ্যপালকে সরাসরি আক্রমণ করে রাজ্য সরকারের তরফে করা এই টুইট যে নবান্ন-রাজভবনের তিক্ত সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটাল, তা যেন দৃশ্যতই স্পষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *