
ডাঃ প্রশান্ত কুমার ঝরিয়াৎ
আমাদের ভারত, ২৩ ফেব্রুয়ারি: চেম্বারে এসে মায়েদের করুন আর্তি ডাক্তারবাবু ছেলে যা খাচ্ছে বমি করে ফেলছে, দয়া করে কিছু একটা করুন। শুধু বাচ্চারাই নয় মাঝেমধ্যে বড়রাও এই একই সমস্যায় ভোগেন।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মায়েরা অনেক সময় ওভারফিডিং অর্থাৎ বাচ্চাকে বেশি খাইয়ে দেন, সে জন্য তারা উদ্বৃত্ত খাবার বমি করে বের করে দেয়। শিশুদের অনেক সময় দুধের মধ্যে যে ল্যাকটোজ আছে সেটি হজম হয় না, তাই তারা দুধ খেলেই বমি করে ফেলে। এছাড়াও অনেক সময় ইনফেকশন থেকেও বমি হতে পারে।
বড়দের ক্ষেত্রেও বমির অনেক কারন আছে। অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খেয়ে গ্যাসট্রাইটিস হয়ে বমি হতে পারে।জন্ডিস হলেও সব সময় একটা গা বমি ভাব থাকে।এছাড়াও গলব্লাডারে পাথর হলে বা কিডনির সমস্যা হলেও বমি বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় মস্তিষ্কের ফ্লুইডের চাপ কোনও কারনে বৃদ্ধি পেলেও বমি হতে পারে।মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলেও বমি হতে পারে। অনেকের আবার গাড়িতে চড়লেও বমি হয়। অনেক সময় কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও বমির উদ্রেক হতে পারে। তাই বারে বারে বমির সমস্যা হলে অবহেলা না করে ডাক্তার বাবুর কাছে যান এবং চিকিৎসা করান।
আসুন আজ আমরা দেখি কোন কোন হোমিওপ্যাথি ওষুধ এই সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে।
সব সময় একটা গা বমি ভাব, কিছু খেতে রুচি নেই এমতাবস্থায় ইপিকাক ঔষধটি অত্যন্ত কার্যকরী।
সকালে ঘুম থেকে উঠে গা বমি ভাব, লিভারের জায়গায় ব্যথা তৎসহ কোষ্ঠবদ্ধতা, ছাগলের মতন মল, এক্ষেত্রে চেলিডোনিয়াম ওষুধটি আপনাকে নিরাশ করবে না।
শিশুরা দুধ খেয়ে ছানা কাটা মতন বমি করছে, এথুজাকে স্মরণ করতে হবে। তবে, বমিতে টক গন্ধ থাকলে ক্যালকেরিয়া কার্ব অত্যন্ত কার্যকরী।
অনেক সময় পাকস্থলীতে ঘা অর্থাৎ গ্যাসট্রিক আলসারের কারনে বমি হতে পারে, সেক্ষেত্রে আর্সেনিক প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ঠান্ডা খাবার পেটে গিয়ে গরম হলেই বমি, ফসফরাস ম্যাজিকের মতন কাজ করবে।
মস্তিষ্কে আঘাত লেগে বমি হলে আর্নিকা জীবন দান করতে পারে।
সাংঘাতিক বমোনেচ্ছায় এপোমর্ফিয়া প্রয়োগ করে দেখুন, কষ্ট লাঘব হবে।
গাড়িতে চড়ে বসলেই বমি সে ক্ষেত্রে ককুলাস আপনাকে অবশ্যই স্বস্তি দেবে।
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় মায়েদের অত্যন্ত বেশি বমি হতে থাকে, সেক্ষেত্রে সিম্ফোরিকার্পাস রেশিমোসা ওষুধটি কে ভুললে চলবে না।
এছাড়াও ধাতু গত লক্ষণ বিচার করে আরও অনেক হোমিওপ্যাথি ওষুধ আছে যেগুলি এই রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কিন্তু সে ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে রোগের তীব্রতা অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা ও তার প্রয়োগ সম্পর্কে জেনে নেবেন।